বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে কবরে শায়িত করে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে কবরে শায়িত করে এখন গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে চায় তারা। শক্তিশালী বিরোধী দল চায়। গতকাল সোমবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আবুল মনসুর আহমেদ দুঃখ করে তার বইয়ে লিখেছেন, ‘১৯৭৩ সালে যেখানে অন্য কোনো দলের ক্ষমতায় আসার কোনো আভাস ছিল না। তারপরও ছোট্ট বিরোধী দলকে আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারেনি।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার বিরোধী দলের নেতৃত্বকে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে হত্যা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। যারা প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের রাজনীতিতে ডুবে থাকে, তারা কী করে শক্তিশালী বিরোধী দলের কথা বলে? এ যেন ভুতের মুখে রামনাম।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় বন্দী করে বিনা চিকিৎসায় হত্যা করার জন্য গৃহবন্দী রাখা হয়েছে, তা দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে। তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়ে, ফরমায়েশী রায় দিয়ে দেশে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না। আমাদের প্রায় ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর নামে এক লাখেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও পাঁচ শ’র বেশি গুমসহ হাজারো নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের দলের সব সিনিয়র নেতার নামে অসংখ্য মামলা। আদালতের বারান্দায় বিএনপি নেতাদের দিন কাটে। বিএনপির মতো বিশ্বে খুব কমই রাজনৈতিক দল আছে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এতো নির্যাতন সহ্য করেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, দেশে নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে অবৈধভাবে সরকার গঠন করে বড় বড় কথা বললেও গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের লড়াইয় তারা পরাজিত হবেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের গৃহপালিত দল ছাড়া এদেশে বর্তমানে সুষ্ঠু ভোট হয়- এ কথাটি কেউ বিশ্বাস করে না। দেশের বৃহত্তম দল বিএনপিসহ অন্যান্য সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার যে আন্দোলন করেছে তার বিজয় সুনিশ্চিত।
এসময় রিজভী অভিযোগ করেন, গত ৩০ জানুয়ারী বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীর প্রচার মাইক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, পোস্টার-ব্যানার লাগাতে দেয়া হয়নি এবং লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। নেতাকর্মীদের মারধরসহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। ভোটের দিন বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে আওয়ামী ক্যাডাররা। ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট পেপার কেড়ে নিয়ে তাতে নৌকা প্রতীকের সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে অনতিবিলম্বে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী জহির সাজ্জাদ হান্নান শরীফ।