শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা থেকে হারিয়ে যাওয়ার দীর্ঘ ৯ বছর পর খোঁজ মিললো জব্বার আলীর। জব্বার আলী(৩৫) নালিতাবাড়ী উপজেলার সেকান্দার আলী ও সবুরী খাতুন দম্পতির একমাত্র পুত্র সন্তান। জব্বারের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছোট থেকে জব্বার আলী অন্যানো সাধারন ছেলেদের মত সুস্থ ছিল। কিন্তু ২৩ বছর বয়স চলাকালীন সময়ে সে হঠাৎ করেই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। এরপর বিগত ২০১১ সালে মানসিক ভারসাম্যহীন জব্বার আলী নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের উল্লারপাড় গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। হারিয়ে যাওয়ার পর বহুদিন সন্তানের খোঁজ করে একপর্যায়ে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন সেকান্দার আলী ও সবুরী খাতুন দম্পতি। কিন্তু এরই মধ্যে ঘটে এক স্মরনীয় ঘটনা। যা ওই দম্পতির মনে আশার আলো দেখিয়েছে।সম্প্রতি নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ানের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ৯ বছর পর মা–বাবা ফিরে পেয়েছেন তাঁদের হারিয়ে যাওয়া সন্তান জব্বার আলীকে। দীর্ঘ ৯ বছর পর সন্তানের ফিরে পাওয়ার ঘটনা ছুঁয়ে গেছে পুরো জেলাবাসীর সবাইকে। নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জব্বার মানুষিক ভারসাম্যহীন হওয়ার কারনে উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। এরপর অনুপ্রবেশের দিয়ে ভারতীয় পুলিশ তাঁকে আটক করে কারাগারে প্রেরন করে । সম্প্রতি গত বছরের ৭ অক্টোবর নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহ্ফুজুল আলম মাসুম উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে ভারতের কারাগারে আটক জব্বারের ছবি, নাম, ঠিকানা দিয়ে সহযোগিতা চেয়ে পোস্ট করেন। এরপর ফেসবুকে জব্বারের গত বছরের ৭ অক্টোবর নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল আলম মাসুম উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে ভারতের কারাগারে আটক জব্বারের ছবি, নাম, ঠিকানা দিয়ে তথ্য চেয়ে পোস্ট করেন। এরপর ফেসবুকে তার ছবি ও নাম ঠিকানা দেখে উল্লারপাড় গ্রামের কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান চিনতে পেরে ইউএনও সাথে যোগাযোগ করে। সুফিয়ানকে ইউএনও মাহ্ফুজুল মৌলভীবাজার সদরের ইউএনও শরিফুল ইসলাম সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। পরে নালিতাবাড়ী (ইউএনও)’র পরামর্শ অনুযায়ী জব্বারের পরিচয়পত্র, নাগরিক সনদ মৌলভীবাজারের সদরের ইউএনও শরিফুল ইসলামের ই–মেইলে পাঠানো হয়। এরপর গত ২৮ জানুয়ারি সিলেটের নয়ানীবাজার শুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরত আনা জব্বারকে তাঁর বাবা সেকান্দার আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এবিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা ইউএনও মাহ্ফুজুল আলম মাসুম ঢাকা পোষ্টকে বলেন, জব্বারকে সিলেটে মৌলভিবাজার থেকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা শেরপুরে পৌছায় নি। কারণ জব্বারের বাবা মা দুজনেই ঢাকা কাজ করেন। তবে যদি জব্বার নালিতাবাড়ী উপজেলায় আসে তখন তার পূনর্বাসনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে।