সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন

অশালীন কথাবার্তা পরিহার করা

মো: তামিম সিফাতুল্লাহ:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ইসলামী শরিয়তে গালিগালাজ, মন্দ ও অশ্লীল কথাবার্তা বিনিময় সম্পূর্ণ নিষেধ। কারণ গালিগালাজ, মন্দ কথা ও অশ্লীল কথা বলার সময় সীমা লঙ্ঘন হয়। কুরআন-হাদিসবিরোধী বাক্যবিনিময় হয়। একজন অন্যজনের দোষ বর্ণনা করে, বাবা-মা তুলে খারাপ কথা বলে। এমনকি পরস্পরে মারাত্মক কলহে জড়িয়ে পড়ে। অশালীন কথাবার্তার ফলে মানুষের মনে জেদ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ফলে রক্তপাত হয়। মন্দ ও খারাপ কথার দ্বারা সমাজের পারস্পরিক সম্প্রীতির সুন্দর ও মধুর বন্ধন তিক্ত হয়, অহঙ্কার বোধের সৃষ্টি হয়, নম্রতা-ভদ্রতার সীমা লঙ্ঘিত হয়।
আল্লাহ তায়ালা কুরআনে কারিমে মানুষকে সুন্দর ও উত্তম কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা মানুষের সাথে উত্তম ও সুন্দর কথা বলো’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৮৩)। অর্থাৎ মানুষের সাথে কথাবার্তায় খারাপ বা মন্দ কথা বলো না। সুন্দর ও উত্তম কথায় বাক্য বিনিময় করো। এ কারণে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কোনো মুমিনকে গালি দেয়া এবং তার সাথে ঝগড়া বা লড়াই করা কুফরি’ (বুখারি)।
মন্দ ও খারাপ কথায় চারিত্রিক অবক্ষয় হয়। বন্ধুবান্ধব একত্রে বসে আড্ডায়, দোকানপাটের আড্ডায়, হাসি ও ঠাট্টার ছলে অশ্লীল কথাবার্তায় মেতে ওঠে। অথচ অশ্লীল কথাবার্তায় মানুষ মারাত্মক অন্যায় ও গোনাহের কাজে জড়িয়ে পড়ে।
অশ্লীল কথাবার্তা কোনো অবস্থাতেই বৈধ নয়। আর কোনো ঈমানদারের পক্ষে অন্যায় কাজ করা তো দূরের কথা, অশ্লীল কথা বলা বা কারো প্রতি গালিগালাজ করা, বিদ্রƒপ বা হাসিঠাট্টা করা সম্ভব নয়। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তি কারো প্রতি অভিশাপ ও লানত করে না এবং সে কোনো অশালীন এবং অশ্লীল কথাও বলে না’ (তিরমিজি)।
রাসূলুল্লাহ সা: সমগ্র বিশ্বের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। ছিলেন উদার ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী। উম্মতে মুহাম্মদির চরিত্র হবে তাঁর আদর্শ ও চারিত্রিক গুণাবলির অধিকারী। বিশ্বনবী সা: শত জুলুম-নির্যাতনের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও কাউকে কখনো মন্দ কথা বলেননি, অভিশাপ দেননি।
হজরত আনাস রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: গালিগালাজকারী, অশালীনভাষী এবং অভিশাপকারী ছিলেন না। আমাদের কারো প্রতি নারাজ হলে তিনি শুধু এটুকু বলতেন যে, ‘তার কী হলো! তার কপাল ধূলিময় হোক’ (বুখারি)। শুধু তাই নয়, তিনি আরো বলেছেন, ‘তুমি রূঢ় (কঠিন ও কর্কশ) ব্যবহার এবং অশালীন আচরণ বা কথাবার্তা ছেড়ে দেবে (বুখারি)।
মুসলিম উম্মাহর উচিত হলো- ইচ্ছায়, অনিচ্ছায়, জেদের বশবর্তী হয়ে, হাসিঠাট্টার ছলে বা অন্য যেকোনো কারণেই হোক অশ্লীল ও মন্দ কথা না বলা। এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবীর ছোট্ট একটি হাদিসই আমাদের জন্য যথেষ্ট। আর তা হলো- ‘প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার কথা ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে’ (বুখারি)। আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে তাদের জবান দিয়ে কোনো মানুষকে অন্যায়, মন্দ ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলা থেকে বিরত রাখুন। কথাবার্তায় সংযমি হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন। লেখক : শিক্ষার্থী, মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসা, রাজশাহী




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com