সরিষার হলুদ ফুলে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ ছেয়ে গেছে। চারদিকে যেন হলুদ ফুলের মেলা। হলুদ সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ আকৃষ্ট করছে মৌমাছিদেরও। তাইতো মৌমাছির দল মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। আর এ হলুদ সরিষা ফুলের মাঝে রঙিন স্বপ্ন বুনছে কৃষকরা। কুমিল্লায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে খুশির ঝিলিক। কম খরচে লাভজনক হওয়ায় সরিষা চাষের দিকেই ঝুঁকছেন তারা। জেলায় নয় হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে, যা গত দশ বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় প্রহর গুনছে কৃষকরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে কুমিল্লা জেলায় ১০ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে গত মৌসুমের মতো এবারো সরিষা চাষে শীর্ষে রয়েছে মুরাদনগর উপজেলা। এ বছর এ উপজেলার সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এছাড়া জেলার হোমনা, চান্দিনা, ব্রাহ্মণপাড়, নাঙ্গলকোটসহ বিভিন্ন উপজেলাতেও বেড়েছে সরিষার চাষ।
চান্দিনা উপজেলার কেরনখাল ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, এ বছর ৯০ শতাংশ জমিতে দেশি লাল জাতের সরিষার চাষ করেছেন তিনি। সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছেন বাম্পার ফলন হবে। গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়ার কারণে এবারো সরিষা চাষ করেছেন তিনি।
সরেজমিনে ঘুরে জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকরা তাদের অধিকাংশ জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশী) বারি-১৪, বারি-৯, সরিষা-১৫ ও স্থানীয় টরি-৭ চাষ করেছে। ফলন ভালো হলে এবং দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষ আরো বাড়বে। এছাড়া সরিষার জমিতে ধানের চাষও ভালো হয় এবং বোরো চাষে খরচ কম হয়। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া থাকায় সরিষা গাছও বেড়ে উঠেছে দ্রুত। যার কারণে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। কৃষকরা জানান, আমন ধান ঘরে তোলার পর খালি মাঠে সরিষার চাষ করেছি, কম পুঁজিতে সরিষা চাষে দ্বিগুণ লাভ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে ৭-৮ মণ সরিষা উৎপাদন করা যায়, যার বাজার মূল্য ১০ হাজার টাকার বেশি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কুমিল্লার উপ-পরিচালক সুরজিত চন্দ্র দত্ত জানান, জেলায় সরিষা চাষ বেড়েছে। কৃষকদের সরিষা চাষাবাদের ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সূত্র : বাসস