মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ভৈরব নদীর গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া খেয়াঘাটের উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটিই ১৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা। খেয়াঘাটের এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। সাঁকোটি মাঝে-মাঝে ভেঙ্গে গেলে,মানুষ পারাবার কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। শত বছরের খেয়াঘাট দিয়ে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে আজো কোন জনপ্রতিনিধির সু’নজর পড়েনি। খেয়াঘাটের এ ব্রিজটি নির্মাণ হলে,মেহেরপুর সদর ও গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষের যাতায়াত সুবিধা হবে। খেয়াঘাটের এ সাঁকো দিয়ে পশ্চিম পাশে অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষকে নিত্যদিন কৃষি পণ্য বিপণন, চিকিৎসা ও শিক্ষার্থীদের স্কুল কলেজে যেতে হয়। সাঁকো দিয়ে খেয়াঘাটের পূর্ব দিকের গাঁড়াবাড়িয়াসহ অন্তর ৫টি গ্রামের মানুষকে পশ্চিম পাশে যেতে হয়। এ বছর ভারি বর্ষণে বাঁশের সাঁকোটি পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। যার ফলে সাঁকোটি এখন দূর্বল কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। তার পরেও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতি প্রয়োজনে সেতটিু দিয়ে পারাপার হচ্ছে। সেতুটি ভেঙ্গে গিয়ে যে কোন সময় মারাত্বক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এমনটি আশঙ্কা করছে এলাকাবাসি। মেহেরপুর জেলা শহর থেকে উত্তর এলাকায় যে কয়টি নদীর উপর দিয়ে পারাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম হচ্ছে গাঁড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া খেয়াঘাট। ভৈরব নদী খননের পর বেশ কয়েকটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া গুরুত্বপূর্ণ এ খেয়াঘাটে আজো কোন ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও এলজিইডি থেকে বার বার আশ^াস দিলেও সেটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি কেউ। বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াতকারি শিক্ষার্থীরা জানায়, ব্রিজ না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। বর্ষার সময় সাঁকো ডুবে গেলে, অনেক দূরের রাস্তা হেঁটে কাথুলী ব্রিজ দিয়ে স্কুল- কলেজে যেতে হয়। স্থানীয় কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক রেজাউর রহমান জানান,দুই উপজেলার দু’টি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার জন্য এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ হলেও এ খেয়াঘাটে আজো ব্রিজ নির্মাণ হলোনা। এটা খুব দুঃখজনক। মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এবং কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা বলেন, শত বছরের পুরাতন এই খেয়া ঘাটটিতে আজো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ব্রিজটি নির্মাণ হলে দুই উপজেলার ১৫টি গ্রামের মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের দাবি করে তিনি বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ব্রিজ নির্মাণের। সেক্ষেত্রে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। ব্রিজটি নির্মিত হলে শিক্ষার পাশাপাশি অর্থনেতিক উন্নয়ন হবে। তাছাড়াও জনগণের দূর্ভোগ কমবে। মেহেরপুরের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন,গাড়াবাড়িয়া-হিতিমপাড়া ব্রিজ নির্মাণে প্রপোজাল পাঠানো হয়েছিল। তবে ত্রুটিযুক্ত হওয়ায় তা ফিরে এসেছে। আবার সংশোধন করে প্রপোজালটি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।