বকেয়া বেতনের দাবী ও ছাটাইয়ের প্রতিবাদে আশুলিয়ায় বেশ কয়েকটি কারখানায়া শ্রমিক বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষুব্দ শ্রমিকরা এসময় আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে রাখে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আশুলিয়ার ৭টি কারখানার সামনে বকেয়া বেতন ও ছাটাইয়ের প্রতিবাদে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে শ্রমিকরা।
কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে আশুলিয়ার টেঙ্গুরী পুকুরপাড় এলাকার গ্লোরিয়াস ড্রেস লি:, ফ্রাওলেন ফ্যাশন লিমিটেড, কুটুরিয়ার জেড এ এ্যাপারেলস লিমিটেড, একই এলাকার টপ গ্রেড ওয়াশিং লিমিটেড, নরসিংহপুর এলাকার আদিয়াত এ্যাপারেলস লিমিটেড এবং খেজুরবাগান এলাকার ক্রিষ্টাল কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে ও কবিরপুর এলাকার পলমল গ্রুপের একটি কারখানার সামনে ছাটাইয়ের প্রতিবাদে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।
শ্রমিকরা জানায়, এই মাসের প্রথম দিকে আমাদের বেতন প্রদান করার কথা। কিন্তু বিভিন্ন তারিখ দিয়ে টালবাহানা করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। একবার বলছে বিকাশে দেবে, একবার বলছে হাতে হাতে দেবে। কিন্তু বিকাশে কিংবা হাতে হাতে কোনভাবেই বেতন দিচ্ছে না। আমরা খুবই অসহায়ভাবে দিন যাপন করছি। আমরা তো ভিক্ষা চাই না, আমাদের কাজের টাকা আমাদের দিতে এতো কষ্ট কিসের। আজকের মধ্যেই আমাদের বেতনের টাকা চাই আমরা।
গ্লোরিয়াস ড্রেস কারখানার শ্রমিক কামরুল, যশর আলী, রিমা, আব্দুর রহিম, সালাউদ্দিন, সীমা, মহসিন সহ আরো অনেকেই জানান, আমাদের কারখানায় প্রায় ৪শতাধিক শ্রমিক রয়েছে। গত তিন মাস ধরে হেলপারদের এবং ২মাস ধরে অপারেটরদের বেতন দিচ্ছেনা কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের ১০ তারিখে বেতন পরিশোধের সময় দেয়। কিন্তু ১০ তারিখ আবার সময় দেয় ১৬ তারিখ বেতন পরিশোধ করা হবে। কিন্তু ১৬ এপ্রিল সকালে কারখানার সামনে এসে দেখি কারখানা বন্ধ। কর্তৃপক্ষের কেউ ফোন ধরে না। পরে জিরানী-আমতলা আঞ্চলিক সড়ক বন্ধ করে দেয় শ্রমিকরা। এতে ওই মহাসড়কে চলাচলরত ছোট ছোট যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ৩০ তারিখে বেতন দেওয়া হবে বলে এমন নোটিশে সড়ক থেকে চলে যায় শ্রমিকরা।
এব্যাপারে গ্লোরিয়াস ড্রেসে লিমিটেডের ফ্যাক্টুরী ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম জানান, আমরা সাব কন্ট্রাকে কাজ করি। বিভিন্ন কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিল উঠাতে পারছিনা। এছাড়া শিপম্যান্ট না হওয়ার কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। তবে এমডি স্যারের সাথে আলাপ হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল বেতন পরিশোধ করা হবে। এ মর্মে কারখানায় একটা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আর শ্রমিকরা যে অভিযোগ করছে তিন মাসের বেতন পাবে সেটা ঠিক না। শ্রমিকরা শুধু মার্চ এবং চলতি মাসের বেতন পাবে এবং হেলপার, কোয়ালিটি ও ফিনিশিং সেকশনের শ্রমিকরা ফেব্রুয়ারি মাসের ওভারটাইম পাবে।
এদিকে, ফ্রাওলেন ফ্যাশন লিমিটেড, কুটুরিয়ার জেড এ এ্যাপারেলস লিমিটেড, একই এলাকার টপ গ্রেড ওয়াশিং লিমিটেড, নরসিংহপুর এলাকার আদিয়াত এ্যাপারেলস লিমিটেড এবং খেজুরবাগান এলাকার ক্রিষ্টাল কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে ও কবিরপুর এলাকার পলমল গ্রুপের একটি কারখানার সামনে ছাটাইয়ের প্রতিবাদে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ করে।
কবিরপুর এলাকার পলমল কারখানার শ্রমিকরা জানায়, কারখানা থেকে ফোন করে বলছে, আমাদের কারখানায় তেমন অর্ডার নেই, তাই আপনাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এই সময়ে ছাটাই করলে আমরা তো না খেয়ে মারা যাবো। এদের মনে কোন দয়ামায়া নেই। আমাদের জন্য একটু দয়া করুন। এই ছাটাই প্রক্রিয়াকে আমরা মানি না। কারখানা বন্ধের সময় ফোন করে ছাটাইয়ের খবর দেওয়া খুবই কষ্টকর ব্যাপার। আমরা আমাদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানাই।
ই-খ/খবরপত্র