শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক দখল করে ইট বালুর রমরমা ব্যবসা, বাড়ছে দুর্ঘটনা

এম কে মনির সীতাকুণ্ড :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সীতাকুণ্ডে মহাসড়ক ও সড়কের পাশ্ববর্তী জায়গা দখলে নিয়ে চলছে ইট বালুর রমরমা ব্যবসা। দিনের পর দিন সড়কের উপর মালামাল, ইট ভাঙার মেশিন, ইটের গাড়ি রেখে যান চলাচল ও পথচারীদের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটিয়ে চলছে এসব ইট বালুর ব্যবসায়ীরা। সড়ক ও সড়কের ফুটপাত দখলে নেওয়ার কোন বৈধতা না থাকলেও আইনের তোয়াক্কা না করেই নির্ভিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দখলদাররা। সরেজমিনে তদন্তে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তরে সীতাকুণ্ড পৌরসভার বাস স্ট্যান্ড দেওয়ান দীঘি, ইদিলপুর, বায়তুশ শরফ, শেখ পাড়া, ভূঁইয়্যার বটতল, ছোট দারোগারহাট ও দক্ষিণে দোয়াজি পাড়া, উপজেলা, শুকলাল হাট, সিরাজ ভূঁইয়া রাস্তার মাথা অংশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ইট-বালুর ব্যবসা। ব্যস্ত মহাসড়কটির বিপদজনক এই জোনে যেখানে পথচারীদের হাঁটা-চলা করার কথা, সেই স্থানে জমাট করে স্তুপ করা হচ্ছে ইট-বালু, রাস্তায় মেশিন বসিয়ে ভাঙা হচ্ছে ইটের কংক্রিট, ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাক থামিয়ে লোড-আনলোড করা হচ্ছে ইট, বালু ও পাথর। আর এসবের ফলে গাড়ি চলাচলে বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি বাড়ছে অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা। পৌরসভাসহ দারোগার হাট হইতে কুমিরা পর্যন্ত অংশটিতে বড় ধরণের দুর্ঘটনার ভয়ঙ্কর ইতিহাস থাকলেও বছরের পর বছর বন্ধ করা যায়নি এসব বিশৃঙ্খলাপূর্ণ বাণিজ্য। সর্বশেষ ২০ ফেব্রুয়ারি সীতাকুণ্ডের উত্তর বাইপাস এলাকায় সিএনজি-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে একজন নিহত হয়, গুরুতর আহত হয় একজন। তারপর দিন ২১ ফেব্রুয়ারি সীতাকু-ের বাদামতল এলাকায় লেগুনা দূর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সবমিলিয়ে সীতাকুণে গত একমাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরেছে ৬ প্রাণ। একের পর এক দূর্ঘটনায় সড়কে মৃতের সারি দীর্ঘ হলেও তেমন কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। ২০০১ – ২০১৯ সীতাকুণ্ডের পন্থিছিলা-ফকিরহাট এলাকায় ঘটেছে অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনা। এক জরিপে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের শুধুমাত্র এই অংশে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৩০ জন । আর সম্প্রতি ফুটপাত দখল হওয়ায় এই অংশটি আরো বিপজ্জনক হয়ে ওঠেছে। দখল করা হয়েছে সড়কের দুইপাশ। রাখা হয়নি পথচারী চলাচলের কোন জায়গা। ছাত্রছাত্রীরাও চলাচল করছে মহাসড়কের উপরে ওঠে। শুধু তাই নয় সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ছেড়ে যাওয়া সিএনজি, অটোরিকশা, রিকশা, পিকআপসহ সবগুলো গাড়ি ওল্টো পথে আসে। তার উপর রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী বাসের ওভারট্রেকিং প্রতিযোগিতা। এমন দৃশ্য সীতাকুণ্ডের শেখপাড়া -বায়তুশ শরফ ও সীতাকুণ্ড বাস স্ট্যান্ডের দক্ষিণ পশ্চিম পাশের দেওয়ান দীঘি অংশে গেলেই চোখে পড়বে। এখানে জমাকৃত এসব বালু গড়িয়ে সড়কে এসে জমা হয়। ফলে কিছু কিছু গাড়ি বালিতে উল্টে যায়। কিছুদিন আগেও এই পয়েন্টে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর বছর খানেক আগে সাবেক এক কমিশনারের কন্যা শিশুর মৃত্যু হয়েছে মহাসড়কে। প্রতিদিন কোন না কোন মোটর সাইকেল আরোহী বড় গাড়ির চাপে পড়ে বালুতে চাকা তুলে দিতে বাধ্য হয়। ফলে বালুতে ওল্টে দূর্ঘটনা ঘটে। যার জন্য দায়ী এসব অবৈধ দখলদার মহাসড়কের পাশে পথচারী যাতায়াতের স্থান দখল করে দীর্ঘদিন ইট-বালুর ব্যবসা চললেও এই বিষয়ে নির্বাক সংশ্লিষ্টরা। দখলদারেরা রাজনৈতিক ছত্রছায়া পাওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদও করেন না। প্রভাবশালীদের জাঁতাকলে সবাই নীরব। শুধু ইট বালির ব্যবসায়ীরা নয় হোটেল, চা-দোকান মালিকসহ যে যেভাবে পেরেছে সেভাবে দখলে নিয়েছে মহাসড়ক। নিজেদের অব্যহৃত গাড়ি, ক্রেন, স্কেবেটর, হোন্ডা, মালামাল ইত্যাদি ফেলে রেখে বছরান্তিকাল ধরে দখলে রেখেছে নিজের সম্মুখের সড়ক অংশটি। স্থানীয়রা জানান, এটি তাদের ব্যবসা হলেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফুটপাত দখল করে এই ব্যবসা একেবারেই বে-আইনী। এলাকাবাসীর দাবি- সড়কের পাশে ইট, বালু, সিমেন্ট রাখার কারণে হাঁটতে গিয়ে মহাসড়কে উঠে যেতে হয়। এতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঝুঁকি সব সময়ই থাকে। তাছাড়া স্তুুপ করা এই বালু দ্রুতগতির গাড়ির বাতাসে উড়ে চালক-পথচারীর চোখে পড়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই বিষয়ে পৌরমেয়র পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাবাদী এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। এসব বিষয়ে কুমিরা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আমিন ফারুক খবরপত্রকে বলেন, সড়ক দখল করে ব্যবসা করার সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি সড়ক ও জনপদের দেখার কথা। আমরা মহাসড়ক নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়। তারপরও যেগুলো একেবারে সড়কের কিনারে সেগুলোকে নিষেধ করা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com