মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৮ অপরাহ্ন

কিশোরগঞ্জের মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার সাড়া জাগিয়েছে

ফকির মতি কিশোরগঞ্জ :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ, ২০২১

সাদী নামে বেশি পরিচিত হলেও পুরো নাম আমিনুল হক সাদী, সাদী একটি নাম একটি ইতিহাস। একটি পাঠাগারের উদ্যেক্তা। নিজের বাড়িটিকেই পাঠাগার হিসেবে একটি আদর্শ বাড়িতে রুপান্তরিত করেছেন। মুজিববর্ষের অঙ্গীকার ঘরে ঘরে পাঠাগার স্লোগানে এলাকার পাঠকদের দৃষ্টি কেড়েছে তার প্রতিষ্ঠিত ‘মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার’। এক দশক যাবত গ্রামীন জনপদে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে পাঠাগারটি। পাঠাগারটির মাধ্যমে একদিকে এলাকার খ্যাতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের মানুষের জ্ঞান আহরণের সুযোগ প্রসারিত হচ্ছে। ইতিহাস ঐতিহ্য সাহিত্য সংস্কৃতিতে অগ্রসর, জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্র হিসেবে রুপ দিতে পাঠাগারটিকে ঢেলে সাজাতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা লেখক ও গবেষক আমিনুল হক সাদী। ইসলামের ইতিহাসে মাস্টার্স পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখি চালিয়ে আসছেন। পুরাকীর্তি ও ইতিহাস ঐতিহ্য অন্বেষন করা তার নেশায় পরিণত হয়েছে। বাই সাইকেল চালিয়ে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে ইতিহাস ঐতিহ্য সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। নিজেও বই লিখছেন ও অন্যন্য লেখকদের লিখা জনসাধারণকে বই পাঠে আগ্রহী করে তোলছেন। বইয়ের সংগ্রহশালা গড়ে তোলার লক্ষে ২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল ‘মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগারের কার্যক্রম প্রথমে তাঁর নিজ বাড়িতে শুরু করেন। সম্প্রতি পাঠাগারটি স্থানান্তরিত করে নীলগঞ্জ-তাড়াইল সড়ক সংলগ্ন নিজস্ব জমিতে নতুন ঘর তৈরী করে এটিকে আরও সম্প্রসারণ করেছেন। তার একান্ত প্রচেষ্টায় সক্রিয় উদ্যোগে তিলে তিলে গড়ে তোলছেন পাঠাগার। পাঠাগারের পাশাপাশি তাঁর প্রতিষ্ঠিত যুব উন্নয়ন পরিষদ ও মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের মাধ্যমে এলাকার ১০০ জন বেকার যুবক ও যুবতীকে আত্মকর্মী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন ট্্েরডে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। এছাড়াও অসহায় শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ, করোনাকালে মাস্ক ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে প্রশংসিত হয়েছে। এ পাঠাগারে রয়েছে সহ¯্রাধিক বই। বইয়ের তালিকায় রয়েছে-স্থানীয়, জাতীয় এবং বিশ্বখ্যতি সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের জীবনী, রবীন্দ্র রচনাবলী, নজরুল রচনাবলীসহ সাহিত্যের বিভিন্ন মাধ্যম এই গ্রন্থাগারটিকে করেছে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। পাঠাগারে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারও স্থাপন করা হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচাসহ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন লেখা ও ছবি রয়েছে। এছাড়াও কিশোরগঞ্জের লেখকদের সংগৃহিত বই নিয়ে “কিশোরগঞ্জ গ্যালারী”, মহিনন্দের লেখকদের লিখা বইসহ “মহিনন্দ গ্যালারী” রয়েছে। পাঠাগারের বিভিন্ন কার্যক্রম ও অর্জিত সনদ সম্মাননা ও পুরস্কারের ছবি নিয়ে একটি সমৃদ্ধশালী সংগ্রহশালা সংক্রান্ত ছবির গ্যালারীও রয়েছে। এই গ্রন্থাগারের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পুরাকীর্তির ছবি সাটিয়ে রাখা এবং তাঁর অনুদিত জেলায় প্রেরিত মুঘল আমলের শাহী ফরমানের লেখা ও মসজিদে উৎকীর্ণ প্রাচীন শিলালিপির বাংলা অনুবাদ সংরক্ষণে রয়েছে। দিন দিন পাঠকদের সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ফেসবুক ও মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটানোরচে পাঠাগারে এসে অবসর সময়টা অতিবাহিত করছেন অনেক পাঠকরা। পাঠাগারে এসে বই পড়ে মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সঠিক এবং বস্তনিষ্ঠ জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হচেছন। পাঠাগারের কার্যক্রম সন্তোষজনক হওয়ায় জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর নিবন্ধন দিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার ও সনদ অর্জন করে প্রশংসিত হয়েছে পাঠাগারটি। এ পাঠাগারের উদ্যোগে জেলার শতাধিক পাঠাগারের ইতিহাস নিয়ে একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে। ২০২০ সালে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসে এ পাঠাগারকে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মাননা পদক অর্জন করেছে। পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ হোসেন জানালেন, প্রথমে পাঠাগারটি বৃটিশ আমলের নায়েব আঃ মতিন নায়েব সাহেবের বাড়ি প্রাঙ্গণে যাত্রা শুরু হয়েছিলো। সেখানে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় সমাজ কর্মী মোঃ নুরুল হক পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল হক সাদীকে কতক জমি লিখে দেন। উক্ত জমিতেই এ পাঠাগারটির নতুন ঘর নির্মাণ করে তিনি পাঠাগারের কার্যক্রমকে সম্প্রসারিত করেছেন। পাঠাগারের নিয়মিত পাঠক মোঃ হাবিবুল্লাহ, সুমন মিয়া ও শহীদ মিয়া বলেন, আমাদের ইউনিয়নের কৃতি সন্তান সাংবাদিক ও লেখক আমিনুল সাদী ভাইয়ের প্রতিষ্ঠিত পাঠাগারে এসে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। একটা সময়ে অনেক ঘুরাঘুরি ও আড্ডা দিতাম। ফেসবুক ও মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটাতাম। কিন্ত পাঠাগারে এসে সে অভ্যাসটা দূর হয়ে গেছে। তাই সকাল ও বিকালে সময় কাটাতে পাঠাগারে এসে বই পড়ে মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সঠিক এবং বস্তনিষ্ঠ জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছি। এছাড়াও সাধারণ অনেক প্রকারের বই পড়ে অতিরিক্ত জ্ঞানার্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। মহিনন্দের তরুণ শিল্পী নিরব রিপন বলেন, পাঠাগারের সারি সারি বইয়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলি। পাঠাগারে সংরক্ষিত বিরল ছবির তালিকায় আমাদের মহিনন্দ ইউনিয়নের জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি, পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাকাল থেতে অদ্যবধি পর্যন্ত শতাধিক সনদ, পুরস্কার গ্রহণের দৃশ্যবলি দেখে আমাদেরও পাঠাগার স্থাপনে আগ্রহ জাগে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিজেও একটি পাঠাগার গড়ে তোলবো। পাঠাগারের পাঠক কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইন্স উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ আবুল কাশেম শামীম বলেন, জ্ঞান অর্জন ও চরিত্র গঠনে বইয়ের বিকল্প নেই। আমি নিজেও একজন পাঠক এতদাঞ্চলের আমার ছাত্ররাও এ পাঠাগারের বই পড়ে উপকৃত হচ্ছে। আমি পাঠাগারটির প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল হক সাদীসহ পাঠাগারের সার্বিক সমৃদ্ধি কামনা করছি। পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল হক সাদী বলেন, বিখ্যাত কবি আল্লামা শেখ সাদীর লিখা কিতাবে পড়েছিলাম ‘আমি মরে যাবো কিতাবের উপর,মৃত্যুর পর আমার কাফন হবে কিতাবের কাগজ দ্বারা’। এ বাণীটি সব সময় আমাকে তাড়িত করতো। যে কারনে নিজ বাড়িতেই পাঠাগার প্রতিষ্ঠার জন্য আগ্রহী হই। জ্ঞান অর্জনে বই পড়ার কোন বিকল্প নাই। একটি লাইব্রেরী এলাকার শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জনে যথেষ্ট সহায়ক। কেবলমাত্র পুঁথিগত বিদ্যা মানুষকে জ্ঞানী করে না। আমার নানা আঃ মতিন নায়েব সাহেবকে জীবদ্দশায় দেখেছি নিয়মিত পত্রিকা ও বই কিনতেন এবং মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বই পত্রিকা পড়ে শুনাতেন। সে কারণে আমি ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি বেশি মনোযোগী ছিলাম। আমি যখন মাধ্যমিকের ছাত্র তখন জেলা পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে বই পাঠ ও রচনা লিখা আহবান করলে আমি তাতে অংশ নিলে জেলায় প্রথম স্থান লাভ করি। আজকের বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ফজলে কবীর স্যার সেসময়ে ছিলেন জেলা প্রশাসক। তিনি সেসময়ে আমাকে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করেছিলেন। এতে আমার আগ্রহ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। পরবর্তীতে এ পাঠাগারের আয়োজনে গ্রন্থাগার বর্ষের প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে তাতেও সনদ প্রাপ্ত হই। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা কার্যালয় হতে পর পর কয়েকবার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সনদ ও পুরস্কার পেয়েছি। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগার হতে নিয়মিত বিভিন্ন জাতীয় দিবসের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শতাধিক সনদ ও পুরস্কার পেয়েছি। এসব পুরস্কার ও সনদ প্রাপ্তিতে আমার উতসাহ বৃদ্ধি পায় এবং পাঠাগার স্থাপনে আরও উদ্বুদ্ধ হই। আমার পাঠাগার তৈরির আগে অন্যজনের পাঠাগার গড়ার কাজে সহযোগীতা করেছি। আমাদের ইউনিয়নের বিবিসিখ্যত কৃতি সাংবাদিক লেখক ও কলামিষ্ট কাদের মাহমুদের গ্রামের বাড়ি উত্তরপাড়ায় ২০০৯ সালে একটি লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করলে সেটির গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাকে। অনেক শ্রমের পর পাঠাগারটির রেজিঃকরনে সক্ষম হই। এখন আমার পাঠাগার দেখে অনেকেই পাঠাগার তৈরীতে আগ্রহী হচ্ছেন। আমার নিজ ইউনিয়নের নামে “মহিনন্দের ইতিকথা” নামে একটি বই লিখে ফেলি। সে বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান (২০১০) করতে গিয়ে প্রতিহিংসার রোষানলে পড়তে হয় আমাকে। বাঁধাগ্রস্থ করা হয় আমার প্রকাশনা অনুষ্ঠান। অবশেষে সব বাঁধা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তৎকালীন মহাপরিচালক সৈয়দা দীনা হকের উপস্থিতিতে বইটির আতœপ্রকাশ ঘটে বৌলাইয়ে। তাই সেদিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষে বই সংগ্রহের কাজে মনোনিবেশ করি এবং দিনটিকে ঐতিহ্য সংরক্ষণ দিবস হিসেবেও পালন করে থাকি। শুধু লিখা নয় বই সংগ্রহ করাটাও নেশায় পরিণত হয়ে যায়। নিজের বইগুলোই সংগ্রহ করি না, অন্যান্য লেখকের বই সংরক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠা করি ‘মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার’। পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠার পর আমাদের মহিনন্দের কৃতি সন্তান শিল্পী বিপুল ভট্্রাচার্যের জীবনীমুলক ‘না ফেরার দেশে শিল্পী বিপুল ভট্্রাচাযর্’ নামে আরও একটি বই (২০১৩) প্রকাশনা করি। গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর মাঝার জিয়ারত করতে গিয়ে সেখানকার লোকজনের মুখে শুনতে পাই ‘রাষ্ট্র চালায় কিশোরগঞ্জ যোগান দেয় গোপালগঞ্জ’। সে উপলব্ধি থেকেই ‘যেমন দেখেছি রাষ্ট্রপতির কিশোরগঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর গোপালগঞ্জ’ নামক একটি বই প্রকাশনা করি। সম্প্রতি ‘কিশোরগঞ্জের গ্রন্থাগার ও মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগারের ইতিহাস’ নামক আরও একটি বই প্রকাশ করেছি। তিনি বলেন, পুরাকীর্তি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে প্রায় তিন শতাধিক ইতিহাস ধর্মী প্রবন্ধ লিখি। যা কিশোরগঞ্জের স্থানীয়, দেশের জাতীয় ও দেশের বাহিরের জার্নালে এবং বিভিন্ন ম্যাগাজিনে অনেক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশের পথে রয়েছে আমার লিখা বেশ কিছু পান্ডুলিপি। তিনি আরও বলেন, পাঠাগারের মাধ্যমে জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগারের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার ও সনদ অর্জন করে প্রশংসিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পাঠাগারটিকে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিবন্ধন দিয়েছে। পাঠাগারের উদ্যোগে বই পাঠ প্রতিযোগিতা, রচনা লিখাসহ বিভিন্ন দিবস পালন করে আসছে। প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদেরকে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করা হয়। পাঠকদের জন্য প্রতিদিন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা এবং বিভিন্ন ম্যাগাজিন রাখা হয়। তিনি আরও জানান, ২০১৬ সালে কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ জেলার পুরাতন কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত একুশে গ্রন্থমেলায় ‘মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার’ স্টল পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। মহিনন্দ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মনসুর আলী বলেন, আমিনুল হক সাদীর প্রতিষ্ঠিত ‘মহিনন্দ ইতিহাসঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার’টি আমাদের মহিনন্দের গর্বই না জেলার গর্ব বটে। সাদী আমাদের ইউনিয়নসহ জেলার ঐতিহ্য নিয়ে লিখে যাচ্ছে বই প্রকাশ ও সংগ্রহও করছে। এমন প্রশংসিত কর্মকান্ডে ও পাঠাগার প্রতিষ্ঠার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ ও দলের পক্ষ থেকে সাদীর সার্বিক অগ্রগতি ও পাঠাগারটির সমৃদ্ধি কামনা করছি। জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক আজিজুল হক বলেন, মহিনন্দ ইউনিয়নের গয়ালাপাড়ার আব্দুল মতিন নায়েব সাহেবের বাড়িতে প্রথমে যখন ‘মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠাগার’ ছিলো তখনও পরিদর্শনে গিয়েছি। সম্প্রতি কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের নীলগঞ্জ-তাড়াইল সড়ক সংলগ্ন পাঠাগারটির আনুষ্ঠানিক ফলক উন্মোচন করেছি। এ পাঠাগারের উদ্যোগে জেলার শতাধিক পাঠাগারের ইতিহাস নিয়ে একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে। পাঠাগারের কার্যক্রম দেখে অভিভূত হয়েছি। পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আমিনুল হক সাদী জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগারের উন্নয়নেও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রতি বছরই তিনি কোনো না কোনো সনদ ও পুরষ্কার অর্জন করে থাকেন। ২০২০ সালে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসে এ পাঠাগারকে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মাননা পদক দেওয়া হয়েছে। এ বছরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের অধীনে কিশোরগঞ্জের ১৪টি বেসরকারী গ্রন্থাগারের জন্য মুজিববর্ষ ও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারের গ্যালারী করে দেওয়া হবে। সে তালিকায় এ পাঠাগারটিও রয়েছে। আমি পাঠাগারটির উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করছি। মহিনন্দ ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পাঠারটিকে টিকিয়ে রাখার লক্ষে বিত্তশালীদেরকে এগিয়ে আসার আকুলতা জানিয়েছে পাঠকরা। সরকারী বেসরকারী অনুদান বা সম্মাননার স্বীকৃতি পেলে আরও প্রসারিত হবে পাঠাগারের কার্যক্রম এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com