রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৮ অপরাহ্ন

আমের রাজধানীতে মুকুলের সমারোহ, মৌ মৌ গন্ধে সুবাসিত বাতাস

আশরাফুল ইসলাম চাপাইনবাবগঞ্জ :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১

শীতের তীব্রতা কাটিয়ে আমের রাজধানীখ্যাত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমবাগানগুলোতে ফুটেছে মুকুল। মুকুলের সমারহে বাতাসে বইতে শুরু করেছে পাগল করা ঘ্রান। প্রতিটি গাছ থেকে আসছে মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আম উৎপাদন হবে বলছে কৃষি বিভাগ। অন্যদিকে গত বছরে করোনার কারনে হওয়া ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আশায় বুক বাঁধছেন আম চাষীরা। জাতীয় বৃক্ষ আম গাছের ডালে ডালে শোভা পাচ্ছে হলুদ আর সবুজের মহামিলন। গাছের প্রতিটি ডালপালায় মুকুলে ছেয়ে গেছে। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ,ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা বাতাস। যে গন্ধ মানুষের মন ও প্রাণকে বিমোহিত করছে, দেখা মিলছে মুকুলের আশেপাশে মৌমাছির আনাগোনা। অনেকেই মুকুল রক্ষা করতে গাছে গাছে ওষুধ স্প্রে করছেন। বাগান মালিকরা মনে করছেন, এবছর আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। তবে মুকুল ফোটা দেখে স্বপ্ন দেখছেন গত বছর ব্যাপক লোকসানে পড়া আমচাষীরা। সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের পলশা গ্রামের আম চাষী মাসুদ আলী বলেন, গতবছর মহামারী করোনার কারনে আমে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আম পাঠাতে না পেরে বাগানেই নষ্ট হয় বিপুল পরিমাণ আম। এমনকি সার, কীটনাশক প্রয়োগ করার খরচ পর্যন্ত উঠেনি গত বছর। একদিকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে রয়েছে। অন্যদিকে আম বাজারজাতকরনে এবছর প্রাণঘাতী করোনার প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন আম বাগানে কাজ করা শ্রমিকরা। এখন চলছে বাগান পরিচর্যার কাজ। তাই তারাও আনন্দিত মুকুলের সমারহ দেখে। শ্রমিক মো. সোহেল রানা বলেন, এবছর মুকুল দেখে খুব আনন্দ লাগছে। আশা করা যায় ভালো ফলন হবে। মালিক যেম লাভবান হবে, আমরাও এবছর পারিশ্রমিক পাবো। সারাবছর অপেক্ষায় থাকি, আমের মৌসুমে ৩ মাস কাজ করার জন্য। কিন্তু গতবছর কাজ করতে পারিনি। আমের আড়ৎদার আব্দুর রাকিব জানান, এখন পর্যন্ত সবকিছুই অনুকূলে রয়েছে। প্রচুর পরিমানে মুকুল এসেছে। গতবছর দোকানঘরের ভাড়া পরিমান অর্থও বয় করতে পারিনি। আশা করছি এবছর ফলন যেমন বেশি হবে, তেমনি দামও বেশি পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, জেলার প্রায় ৯৫ শতাংশ গাছে মুকুল দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে। আমচাষীদের বিভিন্ন সময় পরিচর্চা বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যেমন মাঠ দিবস, উঠান বৈঠক, সভা-সেমিনার ইত্যাদি। তিনি আরো বলেন, ছত্রাকনাশ-কীটনাশক ব্যবহারে স্প্রের পরিমান, ফলন অথবা মটর দানা বাধার সময়, মার্বেল আকৃতি হওয়ার সময় মোট ৩ বার স্প্রে দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে গমএইচ এবং হপারের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য। এছাড়া আমচাষীদের প্রতি ২ মাস অন্তর-অন্তর আম গাছের পাশে সার দেওয়ার জন্য উপ-সহকারী কর্মকর্তা মাধ্যমে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অন্যান্য বিষয়ে পরামর্শের প্রয়োজন হলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, জেলায় ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। এবছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com