এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে নৌশক্তি বাড়ানোর জন্য চতুর্থ বিমানবাহী রণতরী নির্মাণ করছে চীন। আর এ বিমানবাহী এই রণতরী হবে পরমানু শক্তিচালিত। চীনের সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট চীনের নৌবাহিনীর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে বলেছে, ‘জাহাজ নির্মাতারা চতুর্থ বিমানবাহী জাহাজ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জনের জন্য উৎসাহী।’ প্রতিবেদনে ওই ব্যক্তি বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘এটা জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য প্রযুক্তিগতভাবে একটি বিশাল অর্জন হবে।’ অপর একটি অজ্ঞাত সূত্রে বলা হয়েছে, ‘চীনা সামরিক কর্মকর্তারা এ চতুর্থ বিমানবাহী জাহাজে পরমাণু শক্তি ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন।’
তবে ওই ব্যক্তি বলেননি যে, পরমাণু শক্তি ব্যবহারের এটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তবে তিনি পত্রিকাটিকে বলেছেন, ‘এটি একটা সাহসী সিদ্ধান্ত হবে যার পুরোটাই চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ।’ ইতোমধ্যে দুই বছরের বিলম্বিত চতুর্থ এই জাহাজটির নির্মাণ কাজ এই বছরের শুরুতে আবার শুরু হয়।
বর্তমানে চীনা নৌবাহিনীতে দুইটি বিমানবাহী রণতরী চালু আছে এবং তৃতীয়টি এই বছর চালু করার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে এগুলোর কোনোটিই পরমাণু শক্তিচালিত নয়। চীন প্রথমবারের মতো ২০১৭ সালে তাদের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী বিমানবাহী জাহাজ উদ্বোধন করে। এর মাধ্যমে দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্পের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা প্রদর্শিত হয়। ৫০ হাজার টনের বিমানবাহী রণতরীটি শ্যাংডন নামে পরিচিত। এটা সোভিয়েত কুজনেটসোভ-শ্রেণীর বিমানবাহী জাহাজের নকশা অনুসারে তৈরি। এতে বিমান উড্ডয়নের জন্য প্রশস্ত পাটাতন আছে। জাহাজটি তেল শক্তির ওপর নির্ভরশীল। চালু থাকা অপর বিমানবাহী রণতরী ৬০ হাজার টনের লিয়াওনিং বিমানবাহী জাহাজ যা ইউক্রেন থেকে আনা হয়েছে। তৃতীয় জাহাজটি এই বছর চালু করা হবে। এটা ৮৫ হাজার টনের বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে সংবাদপত্রটি প্রতিবেদন করেছে। ২০১৭ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন আরো একটি বিমানবাহী জাহাজ নির্মাণ করছে সাংহাইয়ের বাইরের একটি শিপ ইয়ার্ডে। জাহাজটি আয়তনে মার্কিন পরমাণু শক্তিচালিত এক লাখ টনের নিমিটজ শ্রেণীর জাহাজের কাছাকাছি। এতে বিমানের রানওয়ে সম্বলিত সমতল পাটাতন আছে। পাশাপাশি বিমানগুলো যাতে আবার বোমা ও জ্বালানী নিতে পারে তার ব্যবস্থাও রয়েছে। দুইটি বিমানবাহী রণতরী চালু অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি দেশটিতে এক ডজনের বেশি পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন আছে। চীন বিমানবাহী জাহাজ নিয়ে অভিযান নিয়ে বিপুল কাজ করছে। তবে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় তাদের অভিজ্ঞতা খুবই কম। জ্বালানিসমৃদ্ধ দক্ষিণ চীন সাগরের পুরোটাই দাবি করছে চীন। সাগর নিয়ন্ত্রণের জন্য সামরিক শক্তি বাড়ানোর সাথে সাথে নজরদারির জন্য কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে দেশটি। সূত্র : আলজাজিরা