শীতকালীন শস্যের উচ্চফলনশীলনতার মধ্য দিয়ে বসন্ত শুরু হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর। চলতি বছরের শস্যের ফলন জোটভুক্ত দেশগুলোর ২০২১ সালের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে বলে মনে করছে ইইউর গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ সংস্থা। সংস্থাটির সম্প্রতি প্রকাশিত এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর রয়টার্স। ২০২১ সালে শস্য উৎপাদন নিয়ে সংস্থাটির পূর্বাভাসে বলা হয়, এ বছর ইইউর ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হারে হেক্টরপ্রতি গড়ে ৫ দশমিক ৮৯ টন গম সংগ্রহের সম্ভাবনা ধরা হয়েছে, যার ফলে গত পাঁচ বছরের গড় উৎপাদন থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। এর আগে ২০২০ সালে প্রতি হেক্টরে গড়ে ৫ দশমিক ৭০ টন গম উৎপাদন হয় ইইউভুক্ত দেশগুলোতে।
ম্যানেজিং অ্যাকুয়েটিক ইকোসিস্টেমস অ্যান্ড ওয়াটার রিসোর্সেস আন্ডার মাল্টিপল স্ট্রেস (মার্স) জানিয়েছে, শস্যের সাম্প্রতিক উৎপাদন ও ঐতিহাসিক তথ্যের বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি বছর খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য ফলস উৎপাদন বাড়বে। কারণ বর্তমান সময় উৎপাদনের জন্য অনেকটাই সহায়ক। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়গুলোতে গোটা বিশ্বকে একটা খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ কারণে সংকট কাটিয়ে উঠতে ফসল উৎপাদন তথা কৃষির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে দেশগুলোতে। ফলে উৎপাদন বাড়ার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চায় জোটভুক্ত দেশগুলো। এক পূর্বাভাসে মার্স জানায়, গত বছরের হেক্টরপ্রতি গড়ে ৫ দশমিক ৮৮ টনের বিপরীতে ইইউর শীতকালীন ফসলের পরিমাণ ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়বে। এর মাধ্যমে পাঁচ বছরে গড় বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪ দশমিক ৭ শতাংশে।
অন্যদিকে সরিষা উৎপাদনের ক্ষেত্রে গত বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ এবং পাঁচ বছরের মধ্যে ৬ দশমিক ৮ শতাংশেরও বেশি সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করছে সংস্থাটি। অর্থাৎ চলতি বছর ইইউভুক্ত দেশগুলোতে সরিষা উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ২৬ টনে।
এদিকে ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো জার্মানিতেও বাড়বে উৎপাদন। বিশ্লেষকদের মতে, চলতি বছর জার্মানিতে সব ধরেনর গমে দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে। ফলে দেশটিতে গম উৎপাদন প্রায় ২ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার টনে দাঁড়াবে। কিন্তু সরিষা উৎপাদন কিছুটা কমেছে। চলতি বছরের শীত মৌসুমে সরিষা উৎপাদন সামান্য কমে গেছে। এ সময় গত গ্রীষ্ম মৌসুম থেকে রেকর্ড পরিমাণ দশমিক ৭ শতাংশ কমে এর উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ৮০ হাজার টনে। তবে এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে করছে মার্স। একই সঙ্গে ইইউ জোটের মোট উৎপাদন আগের চেয়েও বাড়বে বলেই প্রত্যাশা তাদের। মার্স বলছে, ইইউতে সাধারণত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির পর শীতের তীব্রতা কমে গরম আবহাওয়া শুরু হয়। এতে বরফ গলতে শুরু করবে। এর মধ্য দিয়ে ফসল উৎপাদন বাড়বে। একই সঙ্গে শীতের নিমজ্জিত অবস্থা থেকে রক্ষা পাবে এখানকার কৃষক সম্প্রদায়সহ অন্যরা।
অন্যদিকে উত্তর ইউরোপের বৃহৎ অংশ, বাল্টিক ও ভূমধ্যসাগরীয় অ লে বৃষ্টির ঘাটতির কারণে ফসলের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাবেরও আশঙ্কা থাকছে না বলে মনে করছে সংস্থাটি।