রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ অপরাহ্ন

দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ

বাসস :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৪ মার্চ, ২০২১

হলুদ রঙের নান্দনিক একটি ফুল সূর্যমুখী। দেখতে সূর্যের মত এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, তাই ফুলকে সূর্যমুখী বলে। সূর্যমুখী থেকে তৈরি তেলও পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ। বিশ্বেজুড়েই সূর্যমুখী তেলের চাহিদা এখন ব্যাপক। আমাদের দেশেও ক্রমশ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়েছে। পুষ্টিবিদদের মতে, সূর্যমুখীর তেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা খুবই কম এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই। এই তেল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
বাসস জেলা প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সূর্যমুখী চাষের চিত্রটুকু তুলে ধরার প্রয়াসে ‘দেশজুড়ে বাড়ছে সূর্যমুখীর আবাদ’ শীর্ষক ধারাবাহিক প্রতিবেদন তুলে ধরা হচ্ছে। আজ থাকছে নীলফামারী জেলায় সূর্যমুখী চাষের চিত্র-
ভোজ্য তেলের ঘাটতি মেটাতে জেলায় এবার প্রায় ২ হাজার বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছে কৃষকরা। প্রতি বিঘায় ২৬৬ কেজি হিসেবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫২৯ টন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের গুড়গুড়ি শেখ পাড়া গ্রামে দেখা যায় ক্ষেত ভরা সূর্যমুখীর ফুল ফুটে এক মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বয়সের নারী-পুরুষ এ দৃশ্য উপভোগ করতে যাচ্ছেন। তারা সেখানে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিচ্ছেন। সেখানে ১৭ জন কৃষক পাশপাশি প্লটে ১৭ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন।
ওই গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী (৪০) বলেন, ‘এবার প্রথম সূর্যমুখীর চাষ করেছি। সরকারি প্রণোদনায় আমরা ১৭জন কৃষক মিলে পাশপাশি ১৭ বিঘার আবাদ করেছি। গাছ এবং ফুল দেখেই বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। তাতে ভালো লাভের আশা করছি।’
একই গ্রামের কৃষক খাদেম আলী (৪৫) বলেন,‘প্রথমবারের এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সামনের বছরগুলোতে এর চাষ আরো বাড়বে। আমাদেরকে দেখে অনেকেই আগামী বছর সূর্যমুখী চাষের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, এবছর ১ হাজার ৯৯০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে জেলায়। প্রতি বিঘায় উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬৬ কেজি। তাতে মোট উৎপাদন হবে ৫২৯ টন। প্রতি কেজি বীজের সম্ভাব্য মূল্য ধরা হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান ম-ল বলেন, ‘এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষে উপযোগী। বীজ রোপনের ১১০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে ওঠে। সরকারি প্রণোদনায় এ বছর জেলায় ১ হাজার ৯৯০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। এটি থেকে ভোজ্য তেলের ঘাটতি মেটানো সম্ভব।’
তিনি জানান, দেশে প্রতি বছর ২৮ হাজার কোটি টাকার ভোজ্য তেল আমদানী করা হয়। তেলের আমদানী কমাতে সরকার এর চাষ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। তাতে করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। সূর্যমুখীর গাছ জ্বালানীর কাজে ব্যবহার হবে। অনেক ব্যবসায়ী সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। আগামীতে এর চাষ আরো কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে।
তথ্যসূত্র মতে, সূর্যমুখীর তেল স¤পূর্ণ কোলেস্টেরলমুক্ত। আছে ভিটামিন-ই, ভিটামিন কে এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন। আছে মিনারেল। হৃদরোগী, ডায়াবেটিসের রোগী উচ্চ রক্তচাপের রোগী, কিডনি রোগীর জন্যও সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com