গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় স্বচ্ছ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া বানচাল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ‘ক’ তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রোবাবার কোটালীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক পলাশ সরদার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়,সরকার মনোনীত একটি কমিটির মাধ্যমে গত ৩০ জানুয়ারী কোটালীপাড়া উপজেলার বেসরকারি গেজেটধারী ৩৩৬ জন মুক্তিযোদ্ধার যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে ২৬ মুক্তিযোদ্ধা না মঞ্জুর বা ‘গ’ তালিকা, ১১৮ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম দ্বিধাবিভক্ত বা ‘খ’ তালিকা ও ১১৯ জনের নাম সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত বা ‘ক’ তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়। এ তালিকা প্রকাশের কিছু দিন পর মাঝবাড়ি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম দাড়িয়া, হিরণ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী, ভূয়ারপাড় গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান শেখ ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে না মঞ্জুর ও দ্বিধা-বিভক্ত তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের কাফনের কাপড় পড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচী করিয়েছেন। মানববন্ধনে অংশগ্রহকারীরা না মঞ্জুর ও দ্বিধা-বিভক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের গৃহীত তালিকাভুক্ত করা না হলে আত্মহত্যার হুমকি দেন। যাচাই-বাছাই কমিটিকে টাকা দিতে না পারায় তারা মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেনি বলেও তারা মানববন্ধনে জানান। যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া বানচালের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হিরণ গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রমজান আলী তার আপন ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের যাচাই-বাছাই করে দেওয়ার কথা বলে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়। সিরাজের নাম দ্বিধাভুক্ত তালিকায় রয়েছে। এ টাকা রমজান আলী আত্মসাত করেছেন। তিনি এখন টাকা নেওয়ার দায় যাচাই-বাছাই কমিটির ওপর চাপাচ্ছেন। উল্লেখিত মুক্তিযোদ্ধারা যাচাই বাছাই কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও অগ্রহনযোগ্য অভিযোগ করেছেন। আমরা এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটালীপাড়া পৌর মেয়র হাজী কামাল হোসেন শেখ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোদাচ্ছের হোসেন ঠাকুর, মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, আতাহার শেখ সহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন। পরে মুক্তিযোদ্ধারা এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করেন। অভিযুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম দাড়িয়া বলেন, যাচাই-বাছাই বানচাল করতে আমরা কোন ষড়যন্ত্র করছিনা। দ্বিধা বিভক্ত বা নামঞ্জুর তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা গৃহীত তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী করেছেন। যাচাই বাছাইয়ে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করেন মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী মুক্তিযোদ্ধারা। তারা গৃহীত তালিকা ভুক্ত হওয়ার দাবি করেছেন। এটি তাদের ন্যায্য দাবি। এটা করলেই আর কোন সমস্যা থাকে না।