রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে সহকর্মীর গুলিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা সংস্কার) দলের সশস্ত্র কমান্ডার বিশ্ব চাকমা নিহত হয়েছেন। তিনি জেএসএস-এমএম লারমার সামরিক কমান্ডার ছিলেন। গতকাল বুধবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটার সময় বাঘাইছড়ির বাবুপাড়া এলাকায় সশস্ত্র অবস্থায় দায়িত্ব পালনকালে এই ঘটনা ঘটে। ঘাতক সুজন চাকমা যোদ্ধাকে হত্যা করে তার সঙ্গে থাকা একটি অত্যাধুনিক এম ফোর রাইফেল ও একটি একে-৪৭ রাইফেল নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভোরের বাঘাইছড়ির থানার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে সকালের দিকে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জেএসএস এমএন লামার দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার সময় বাঘাইছড়ির বাবুপাড়া এলাকায় সশস্ত্র অবস্থায় দায়িত্ব পালনের সময় সামরিক কমান্ডার বিশ্ব চাকমা ওরফে যুদ্ধ চাকমাকে কাছ থেকেই দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় সুজন চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে। শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে এসে বিশ্ব চাকমার লাশ দেখতে পায় সহকর্মীরা। তার সঙ্গে দায়িত্বে থাকা সুজন চাকমাকে তারা দেখতে পায়নি। তারা বলেন, ঘাতক সুজন চাকমা যুদ্ধকে হত্যা করে তার সঙ্গে থাকা একটি অত্যাধুনিক এম ফোর রাইফেল ও একটি একে-৪৭ রাইফেল নিয়ে পালিয়ে গেছে। এদিকে, ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলসহ তার আশেপাশে এলাকায় যৌথবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস মূল দল) সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে বিশ্বমিত্র চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে। আর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস মূলদল) নেতা ত্রিদিব চাকমা। সংস্কারপন্থী জেএসএস এর দলীয় দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নিহত যুদ্ধ চাকমা বিগত চার বছর আগে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস থেকে অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে এসে সংস্কারপন্থী জেএসএস এমএন লারমা দলে যোগদান করে। পরবর্তীতে তাকে সংগঠনটির বাবু পাড়া এলাকার সামরিক কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিদিন রাতে তার নেতৃত্বেই এলাকায় সামরিক টহল দিতো সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার রাতে সশস্ত্র অবস্থায় ডিউটিতে থাকাকালীন সময়ে তার সঙ্গে থাকা ছদ্মবেশি সহকর্মী সুজন চাকমা গভীর রাত আড়াইটার সময় গুলি করে যুদ্ধা চাকমাকে হত্যা করে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, একটি একে-৪৭ ও একটি এম ফোর অস্ত্র নিয়ে সুজন চাকমা জেএসএস মূল দলে যোগদানের উদ্দেশ্যে যুদ্ধাকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন তারা।