প্রচ- গরমের সময়ে এবারের রোজা শুরু হয়েছে। তাই সঠিক পুষ্টিমানের খাবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সুস্থ শরীরে রোজা রাখার জন্য। আমাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে শরীরকে সুস্থ রাখে ইফতার, সেহরি, রাতের খাবার এ তিনটি খাবারের গুরুত্ব অনেক। শরীরকে হাইড্রেট রাখতে খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে প্রচুর পরিমাণে পানি, মৌসুমি ফল ও সবজির জুস বা স্মুদি এ ধরণের তরল, ঠা-া খাবার ও আঁশজাতীয় খাবার। পরিহার করতে হবে সব রকম চিনিযুক্ত জুস বা খাবার। তবে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এসব চিনিযুক্ত খাবার না খেয়ে প্রাকৃতিক খাবার থেকে এনার্জি নেয়া। আমাদের মনে রাখতে হবে, সেহরিতে স্বাস্থ্যসম্মত সঠিক খাবার খেলে রোজার নানাবিধ শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে। ধরা যাক – কোষ্ঠকাঠিন্য, এসিডিটি, মাথাব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, দুর্বলতা ইত্যাদি মোকাবিলা করতেও সাহায্য করবে। আমাদের সবাইকে সুষম ও পরিমিত খাদ্য অবশ্যই খেতে হবে সুস্থ ও সতেজভাবে রোজা রাখার জন্য।
তাই বাংলাদেশ জার্নালের পাঠকদের জন্য আজকে থাকছে এমন কিছু স্বাস্থ্যসম্মত খাবার যা সেহেরিতে খেলে আপনাকে সারাদিন সুস্থ রাখবে। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার আমরা সবাই জানি কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ সব খাবার আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ দেয় এবং খাদ্যে আঁশের চাহিদা জোগায় এই জাতীয় খাবার। সারা দিন অনেক শক্তিশালী এবং কর্মক্ষম রাখবে সেহরিতে এই জাতীয় শর্করাযুক্ত খাবার খেলে। এই জাতীয় খাবারের মধ্যে রয়েছে- লাল চালে ভাত, লাল আটার রুটি, বাদামি রুটি, ওটস, সিরিয়াল, বার্লি, কর্ণ স্যুপ ইত্যাদি। তবে মনে রাখতে হবে এই সব খাবার পরিমানে কমখেতে হবে সাথে সবজি ও ফল এর পরিমান বেশি নিতে হবে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সেহরিতে নজর দিতে হবে প্রোটিন জাতীয় খাবারের দিকে। কারন এটি আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। প্রোটিনের ভালো উৎস হলো মুরগি, মাছ, দুধ, দুধের তৈরি খাবার, ডিম ইত্যাদি। এগুলো শুধুই প্রোটিন নয়, ফসফরাস, জিংক, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদির ভালো উৎস। এসব পুষ্টির উপাদান রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে, ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য বজায় রাখা ছাড়াও আরো নানাবিধ কাজে সাহায্য করে। এর মধ্যে অন্যতম হলো দুধ যা প্রোটিনের পাশাপাশি আপনার শরীরে ক্যালসিয়াম সরবরাহ করবে এবং হাড়ের সুস্থতার জন্য জরুরি। লো ফ্যাট দুধ খেলে চর্বি ও ক্যালরি কম পাওয়া যাবে, যা রক্তের কোলেস্টেরল বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া যাঁরা দুধ হজম করতে না পারে, তাঁ এই চাহিদা পূরণ করতে পারবেন রা দই বা ছানা খেলেও। ভোররাতে চাইলে দুধ-ভাত-আম-কলা খাওয়া যেতে পারে। ফল ও সবজি সেহরিতে কোন ধরনের টক ফল না খাওয়াই ভালো আমাদের জন্য । মাঝারি আঁশযুক্ত ফল বা নরম পাকা ফল বেশি উপকারী। সাধারণত পেঁপে, কলা, আম, আপেল ইত্যাদি অথবা ফলের ও দুধের তৈরি কাস্টার্ড খাওয়া যেতে পারে। আবার তরমুজ, আপেল, তাল, কমলা, মাল্টা, কলা ও পেয়ারা খেতে পারেন। এছাড়া খেতে পারেন মাঝারি আঁশের সবজি এবং নরম সুসিদ্ধ সবজি সেহরিতে খাওয়ার জন্য ভালো। ঝিঙে, চিচিংগা, লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, গাজর ইত্যাদি খাওয়া ভালো। সেহরিতে প্রতিদিন সবজি খাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এতে শরীর ভালো থাকবে। তরল খাবার সেহরিতে পানি পান করা উচিত। এতে হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকে এবং হজম ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। খুব ঠান্ডা এবং খুব গরম পানি এড়িয়ে চলুন। এ ছাড়াও তরল হিসেবে দুধ, পাতলা সাগু বা সুজি, ডাল, স্যুপ ইত্যাদি শরীরের সহ্য ক্ষমতা অনুযায়ী খাওয়া যেতে পারে। অন্যান্য খাবার মাছ বা মুরগি, সবজি, খেজুর একটি, চিড়া-দিই/ মুড়ি-দুধ, ডাল, বাদাম ইত্যাদি।