মাঠের পর মাঠে সবুজের সমারাহ। সেই মাঠে দেখা দিয়েছে ধানের শীষ। সবুজ আভা কেটে হলুদ ধারণ করতে শুরু করেছে ধানের গাছগুলো। ধান গাছের সোনালী শীষে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন উপজেলার কৃষক। কৃষি অফিসের নজর দারি না থাকায় হঠাৎ করে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ধান ক্ষেতে নেক বা শীষ ব্লাস্ট রোগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধান ক্ষেত। ক্রমেই বেড়েই চলছে এর সংক্রমণ। এক জমি থেকে আরেক জমির ধান ক্ষেতে ছড়াচ্ছে এই রোগ। ক্ষেতেই ফসল হারিয়ে ভবিষ্যতে না খেয়ে থাকার আশঙ্কায় হতাশ কৃষক। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে ১০ হাজার ৮শ ৭৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করছেন কৃষক। কোন প্রাকৃতিক দূয়োগ না হলে হয়রত আর কয়েকদিন পড়ে কৃষকের গোলায় ফসল উঠত তাদের। ঠিক এ মুহুর্তে পাইরিকুলরিয়াপ্রিসিয়া নামক ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে আগাম জাতের বি-২৮। শীষের গোড়া অথবা শাখা প্রশাখায় গোড়ায় কালো দাগ হয়ে পঁচে যাচ্ছে। ভেঙ্গে পড়েছে শীষ। দুর থেকে দেখলে মনে হয় যেনো পাকা ধানের ক্ষেত। সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত নেক ব্লাস্ট রোগের পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি, তবে কৃষকরা বলছেন উপজেলায় ৩ থেকে ৫ হেক্টর জমির ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। এখনো বেড়েই চলছে এর সংক্রমণ। কৃষকরা জানায়, ধান ক্ষেত বড় বড় শীষ দেখে চোষ জুড়িয়ে যেতো। স্বপ্ন দেখতাম ভালো ফলনের। কিন্তু ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগের সংক্রমণ সব ধান চিটায় পরিণত হয়ে সে স্বপ্ন ধোয়াশায় মিশে গেছে তাদের। গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের নিউ ষ্টারপাড়া গ্রামের কৃষক ছাত্তার আলী, আলা মিয়া, মানিক মিয়া, গান্নারপাড় গ্রামের মিজানুর রহমান, পূর্ব নবনীদাস গ্রামের দিবাকর রায় শ্যামল, কোলকোন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ কোলকোন্দ গ্রামের দুলাল মিয়া, ইউনুছ আলী, জিতেন চন্দ্র রায় বলেন, তাদের জমিতে রোপনকৃত বি-২৮ ধানের আগাম ধান নেক ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান ঢিংপাড়া গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, যতদিন থেকে ধান আবাদ করি কৃষি অফিসারকে মাঠে দেখিনি। ভূক্তরোগীরা জানান, কৃষি কর্মকর্তার নজর দারি না থাকায় কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের দাবি। গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, নেক ব্লাস্ট রোগে ধানের শীষের নিচে কালো দাগ দেখা যায় ও শীষ দ্রুত মরে যায়। নেক ব্লাস্ট রোগ দমনের জন্য কৃষি বিভাগ কাজ করছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কৃষকরা তাদের জমিতে কীটনাশক ছিটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।