রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১০ অপরাহ্ন

বোরো : ১৮ লাখ টন ধান-চাল কিনবে সরকার, চালের কেজি ৪০ টাকা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১

চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে মোট ১৮ লাখ টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এর মধ্যে মিলারদের কাছ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল, ৩৯ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কেনা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তবে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সংগ্রহ মূল্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর চূড়ান্ত হবে। এরপরই এটি প্রকাশ করা হবে। সভায় উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জাগো নিউজকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এবার বোরোতে চালের আকারে ১৫ লাখ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে। যদিও খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ১৪ লাখ টন সংগ্রহের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু খাদ্য মজুত বাড়াতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও এক লাখ টন বেশি সংগ্রহ করতে বলা হয়। গত বছর বোরো মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা কেজি দরে আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। তবে বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় গত বোরো ও আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান-চাল কিনতে পারেনি সরকার। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে ধান এবং ৭ মে থেকে চাল সংগ্রহ শুরু করতে চায় খাদ্য বিভাগ। বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
সভায় বোরো ধান ও চালের কেজি প্রতি সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় বলে জানান সভায় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা। তিনি জানান, সভায় এবার বোরো ধান ও চালের উৎপাদন ব্যয় তুলে ধরা হয়। কৃষি বিপণন অধিদফতর হিসাব অনুযায়ী, ধানের কেজি প্রতি উৎপাদন ব্যয় ২৬ টাকা ১ পয়সা, চালের ৩৮ টাকা ৯৬ পয়সা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ধানের ২৬ টাকা ১৯ পয়সা, চালের ৩৮ টাকা ৫৩ পয়সা; বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ধানের ২৫ টাকা ২৮ পয়সা, চালের ৩৭ টাকা ৭ পয়সা এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের ধানের ২৭ টাকা এবং চালের উৎপাদন ব্যয় নির্ধারণ করেছে ৩৯ টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সভায় বলা হয়, ধান ও চালের এমন একটি সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করতে হবে যেটা বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা না হলে মূল্য নির্ধারণ করে কোনো লাভ হবে না। সরকার আগের মতো ধান-চাল কিনতে পারবে না।
এক্ষেত্রে খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী কেজি প্রতি চাল কেনার দাম ৪০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত বছর চালের দাম ছিল ৩৬ টাকা, একবারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকায় যাওয়া ঠিক হবে না। এটা খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দেবে। তাই খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ৩৯ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আলোচনার পরে ঠিক হয় কেজি প্রতি ধানের দাম ২৭ টাকা এবং চাল ৪০ টাকাই থাকবে, আর আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে সিদ্ধ চালের চেয়ে এক টাকা কম দামে। তবে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেবে। তারপরই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
মজুত নিয়ে উদ্বেগ
সভায় খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে খাদ্যশস্যের সরকারি মজুতের বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। সেখানে বলা হয়, দেশে বর্তমানে (২১ এপ্রিল) খাদ্যশস্যের মোট মজুত ৪ লাখ ৬৮ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ৩ লাখ ১০ হাজার টন এবং গম এক লাখ ৫৮ হাজার টন। গত বছর এই সময়ে মজুত ছিল ১৩ লাখ ৭৬ হাজার টন।
সভায় থাকা ওই কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই মজুতকে আশঙ্কাজনকভাবে কম বলেছেন। তিনি দ্রুত মজুদ বাড়ানোর তাগিদ দেন। এ ছাড়া অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়, খাদ্যশস্যের মজুত কমপক্ষে ১০ লাখ টন থাকা উচিত।
ভার্চুয়াল সভায় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com