সরাকরি প্রজ্ঞাপনে চলমান লকডাউনে কাঁচাবাজারগুলো উন্মুক্ত স্থানে পরিচালনার কথা বলা থাকলেও তা জানে না ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংস্থাটি বলছে, সরকারের গাইডলাইনে কাঁচাবাজারের বিষয়ে কিছু বলা নেই। এতে করোনা ঝুঁকি নিয়ে গাদাগাদি করেই বাজার করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অবনতির কারণে প্রজ্ঞাপন জারি করে লকডাউন বাড়ানো হয় ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। এই সময় কাঁচাবাজার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্রয় করা হবে। ১২ এপ্রিল এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু লকডাউনের এই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না কাঁচাবাজারে। এ বিষয়ে পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রথমে সরকারি গাইডলাইন পড়ে তাকে ফোন করতে বলেন। তখন তাকে জানানো হয়, ‘লকডাউনে কাঁচাবাজারগুলো উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে।’ কিন্তু বিষয়টি মানতে রাজি নন তিনি। উল্টো প্রতিবেদককে তিনি বলেন, সরকারের জারি করা পুরো গাইডলাইন পড়ে তারপর যেন তাকে ফোন করা হয়।
উন্মুক্ত স্থানে কাঁচাবাজারের প্রসঙ্গ তোলা হলে তিনি বলেন, ‘কাঁচাবাজার? আপনি এই বছরের মিনিস্ট্রির পরিপত্রগুলো একটু ভালোভাবে পড়েন। তারপর আমি কথা বলি? সেখানে দেখেন কাঁচাবাজারের কথা কিছু বলা আছে কিনা।’ দ্বিতীয় দফায় তাকে ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আরোপিত বিধিনিষেধের সংশ্লিষ্ট ‘জ’ অংশটি পড়ে শোনানো হয়। এটা শুনে সুর বদলান তিনি। তখন উল্টো প্রতিবেদকের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘এটা কত তারিখের? এটা কি স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে দিয়েছে?’ জবাবে এ প্রতিবেদক তাকে জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত ১২ এপ্রিল জারি করা হয়েছে। এরপর রাসেল সাবরিন বলেন, ‘না, কাঁচা বাজারগুলো.. ক্ষেত্রে বিশেষে..। কাঁচাবাজারের ক্ষেত্রে আমরা যেটা…। আমাদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে জায়গা নেই। গতবছরও আমরা দেখেছি, উন্মুক্ত স্থানে যেখানে দুয়েকটা বাজার নিয়েছি সেখানেও সেই একই অবস্থা। আমাদের নির্দেশনা হলো, যেখানে উন্মুক্ত জায়গা আছে সেখানে বাজার স্থানান্তর করবো। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা যারা আছেন তারা কিছু কিছু বাজার অপসারণ করেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা সম্ভব হয়নি জায়গার অভাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজার পরিচালনা করার জন্য আমরা কাজ করছি।’
জানা গেছে ডিএসসিসিতে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলো বাদে ১৩টি কাঁচাবাজার রয়েছে। এসব বাজারের একটিও উন্মুক্ত স্থানে স্থানান্তর করা হয়নি। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও ভোর থেকে রাত অবধি সব বাজার খোলা থাকতে দেখা গেছে। দোকানগুলো ছোট ও গলিগুলো চিকন হওয়ায় জনসাধারণকে গাদাগাদি করেই চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উন্মুক্ত স্থানে বাজার বসানোর জন্য বলা হয়নি। জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়া হলে উন্মুক্ত জায়গার দোকান নিয়ে বসতে রাজি তারা।-বাংলাট্রিবিউন