একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রায় ২০০০-২৫০০ ক্যালোরি সমপরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হয়। তবে রোজার সময় ১০০০ থেকে ১৫০০ ক্যালোরি খাবার গ্রহণ যথেষ্ট। কারণ রোজায় অল্প খাবার গ্রহণ করলেই অটোফ্যাজি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের ক্ষতিকর কোষ সমূহ পরিষ্কার হয়। তাই অন্যান্য সময় যে পরিমাণ খাবার খাওয়া যায়, রোজায় তার চেয়ে এক তৃতীয়াংশ কম খেতে হবে।
সেহরির সময় যা করণীয়: সেহরি একটু দেরিতে করাই ভালো অর্থাৎ আজানের আগে আগে। দেরিতে করার জন্য এই কারণে বলা হয়েছে যেন সেহরি করে ফজর নামাজের প্রস্তুতি নেয়া যায়। ফজরের নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে নামাজ শেষ করে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে তারপর ঘুমাতে পারলে তা খাবার পরিপাকে সহায়তা করে। যদি কেউ ফজরের সময় হওয়ার ১-২ ঘন্টা আগে সেহরি করে তাহলে সে সেহরি শেষ করে ২ ঘন্টা বসে থাকবে না বরং শুয়ে পড়বে। আর খাবার খেয়ে সাথে সাথে ঘুমানো অ্যাসিডিটির অন্যতম কারণ।
সেহরির খাবার কী হবে? ভাত, মাছ/মুরগি, ডাল, সবজি ইত্যাদি খেতে পারেন সেহরিতে। পরিমাণে খুব বেশিও না আবার খুব কমও না। ২ কাপ পরিমাণ (১০০ গ্রাম) ভাত, সাথে ১ টুকরো মাছ/মুরগি, ডাল, সবজি হলেই যথেষ্ট। সম্ভব হলে এক দুইটা খেজুর। অতিরিক্ত ঝাল খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার কিংবা তেলে ভাজা খাবার সেহরিতে খাবেন না। সেহরি শেষ করে সম্ভব হলে ৩-৪ চামচ ইসুপগুলের ভুষি দিয়ে এক গ্লাস শরবত গুলে খেতে পারেন। কারণ ফাইবারজাতীয় খাবারের মধ্যে ইসুপগুলের ভুষি অন্যতম। এটা শরীরের পানি ধরে রাখে এবং পানির পিপাসার পরিমাণ কমায়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্যও এটা উপকারী।
যাদের আগে থেকেই অ্যাসিডিটি কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তাদের করণীয় কী? মূলত যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা কিংবা গ্যাস্ট্রিক রয়েছে, তারা গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খেতে পারেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে রোজা রাখতে পারবেন।
সতর্কতা: বিভিন্ন রোগী ও তার অসুস্থতার অবস্থা ভেদে খাবারের জন্য ডায়েট চার্ট করা জরুরি এবং বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করার প্রয়োজন হতে পারে সেক্ষেত্রে সরাসরি চিকিৎসক কিংবা পুষ্টিবিদ ও ডায়েট বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. ইসমাইল আজহারি,চিকিৎসক, ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।