দেশে আজ মৃত্যু ৯৭ , শনাক্ত ৩৩০৬
দেশে পাঁচদিন পর গতকাল আবারো শতাধিক করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আজও মৃত্যু হয়েছে ৯৭ জনের। এ নিয়ে গত ১১ দিনে এক হাজারের বেশি করোনা রোগীর মৃত্যু হলো। গত বছরের মার্চে দেশে প্রথম কভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্তের পর এটিই সবচেয়ে কম সময়ে এক হাজার করোনা রোগী মৃত্যুর ঘটনা। আর গতকাল কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার পেরিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গতকাল সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩০৬ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় দেশে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৬২৮। আজ ৯৭ জনের মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ১৫০।
সরকার ঘোষিত কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ১৫ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর আগে মৃত্যু নয় হাজার ছাড়ায় গত ৩১ মার্চ। আট হাজার থেকে মৃত্যু নয় হাজার ছাড়াতে সময় লেগেছিল ৬৭ দিন। আর এ সংখ্যা নয় হাজার থেকে ১০ হাজারে আসতে সময় লেগেছিল ১৫ দিন। সর্বশেষ মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে মৃত্যুর সংখ্যা ১১ হাজারে পৌঁছে।
গত বছরের মার্চে দেশে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। পরে সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়। তবে প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের সংক্রমণের তীব্রতা খুব বেশি। বর্তমান পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে বাংলাদেশ ৩৩তম এবং মৃতের সংখ্যা ৩৭তম অবস্থানে রয়েছে।
চলমান ‘বিধিনিষেধ’ থাকছে আরও ৭ দিন: করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ৫ মে পর্যন্ত এই ‘বিধিনিষেধ’ বহাল থাকবে।
গতকাল সোমবার (২৬ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আয়োজনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রতিমন্ত্রী এবং সভায় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আট দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। সেই মেয়াদ শেষ হয় গত বুধবার (২১ এপ্রিল) মধ্যরাতে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ আগামী ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।