শেষ দিনের প্রথম সেশনেই শেষ বাংলাদেশের লড়াই।শেষ দিনের প্রথম সেশনেই শেষ বাংলাদেশের লড়াই। সকালে ধারাভাষ্যকাররাই বলছিলেন, উইকেট খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। দৃঢ় প্রত্যয় থাকলেই টিকে থাকা সম্ভব এই উইকেটে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার মানসিকতায় প্রতিরোধ গড়া যায়নি। উল্টো শ্রীলঙ্কার কাছে তারা দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হেরেছে ২০৯ রানে। এই হারের ফলে লঙ্কানদের কাছে ১-০ তে সিরিজও হেরেছে মুমিনুলরা। এই মাঠে প্রথম টেস্টটি ড্র হয়েছিল।
ক্যান্ডিতে গত রোববার থেকেই হার চোখ রাঙাচ্ছিলো বাংলাদেশকে। ৪৩৭ রানের অসম্ভব লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭৭ রানে হারায় ৫ উইকেট। অবশ্য লঙ্কানরা যে লক্ষ্য দিয়েছিল সেটি করতে হলে টেস্টের ইতিহাসই বদলাতে হতো। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় সেটি সম্ভব না হলেও শ্রীলঙ্কান স্পিনারদের আধিপত্য ও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সফরকারীরা কতক্ষণ টিকে থাকে সেটি-ই ছিল দেখার। শেষ দিনের প্রথম সেশনে তা আর পারলো কই বাংলাদেশ? ঘণ্টা খানেকের বেশিই টিকতে পারলো মিরাজদের লড়াই। দিনের তৃতীয় ওভারেই অভিষিক্ত জয়বাবিক্রমার ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন লিটন। স্বাগতিকরা লেগ বিফোরের আবেদন করলে অনফিল্ড আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে তুলে দেন আঙুল। কিন্তু লিটনের সংশয় থাকায় তিনি রিভিউ নিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্য তাতেও লাভ হয়নি। নষ্ট হয়েছে রিভিউ। স্বীকৃতি ব্যাটসম্যানের শেষ জুটি ভাঙে লিটনের ১৭ রানের বিদায়ে। এর পরও মিরাজ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টা করেন। তাকে সঙ্গ দেন তাইজুল। কিন্তু বামহাতি স্পিনার ৩০ বলই টিকতে পারলেন। ২ রান করা তাইজুলকে কিপারের গ্লাভসবন্দি করিয়েছেন অফস্পিনার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
ধারাভাষ্যকাররা এর মাঝেই বলছিলেন, উইকেটের চরিত্র অতটা বিপজ্জনক নয়। তাই দৃঢ় প্রত্যয় প্রয়োজন টিকে থাকতে হলে। সেই কাজটিই সকাল থেকে করার চেষ্টা করেন মিরাজ। কিন্তু অপর প্রান্ত নড়বড়ে থাকায় কাক্সিক্ষত সমর্থন পাননি। তাইজুলের পর মেরে খেলার খেসারত দিয়েছেন তাসকিন। রামেশের ঘূর্ণিতে ৩৩ বলে ৭ রান করে এই পেসার তালুবন্দি হন করুনারত্নের। কিছুক্ষণ পর ফিরে যান মিরাজও (৩৯)। জয়াবিক্রমার ঘূর্ণিতে সুইপ খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন শর্ট লেগে থাকা নিসাঙ্কার হাতে। এই উইকেট নিয়েই লঙ্কানদের হয়ে ইতিহাস গড়েছেন জয়াবিক্রমা। অভিষেকে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন শ্রীলঙ্কান কোনও বোলার। এর পর রাহিকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশের ইনিংসের লেজ ছেঁটে দেন তিনি। বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২২৭ রানে। শেষ উইকেটটি তুলে নিয়ে অভিষেকে জয়াবিক্রমা পেলেন ১১ উইকেট। ১৭৮ রান দিয়ে ১১ উইকেট নেওয়ায় অভিষেকে বামহাতি কোনও স্পিনারের সেরা বোলিং ফিগারও এটাই। ম্যাচসেরাও হয়েছেন প্রবীণ জয়াবিক্রমা। আর সিরিজ সেরা দুই টেস্টে সর্বোচ্চ রান করা করুনারত্নে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: শ্রীলঙ্কা: ৪৯৩/৭ ডি. (করুনারত্নে ১১৮, থিরিমান্নে ১৪০; তাসকিন ৪/১২৭) ও ১৯৪/৯ ডি. (করুনারত্নে ৬৬, তাইজুল ৫/৭২)
লক্ষ্য: ৪৩৭,বাংলাদেশ: ২৫১ (তামিম ৯২, মুমিনুল ৪৯; জয়াবিক্রমা ৬/৯২) ও ২২৭ (মুশফিক ৪০, মিরাজ ৩৯; জয়াবিক্রমা ৫/৮৬, রামেশ ৪/১০৩)