“মোর রিকশাত কাইয়ো চইড়বার চায় না, সগাই সবল রিকশাওয়ালা খোঁজে বাহে” শিরোনামে প্যাডেল চালিত রিকশার চালক আনিছুর রহমানকে নিয়ে গত মার্চ মাসে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন আনিছুর রহমানের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেও আনিছুর রহমানের ভাগ্যে জোটেনি একটি ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা। অবশেষে প্রায় ৩ মাস পর ৯ মে রোববার রাতে তিনি একটি মিশুক (ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা) উপহার পেয়েছেন। জাতি ধর্মের বিভেদ নয়, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানবতার জয়। পবিত্র লাইলাতুল কদরের রাতে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক ব্যক্তি মানবতার এমন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রোববার তারাবীর নামাজ শেষে ভূরুঙ্গামারী সরকারি কলেজ জামে মসজিদ চত্বরে সেই বৃদ্ধ রিকশা চালক আনিছুর রহমানের হাতে মিশুকের (ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা) চাবি তুলে দেয়া হয়। আনিছুর রহমানের প্রতিবেশি সহকারি শিক্ষক আরিফুর রহমান তার ফেসবুক আইডিতে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও বৃদ্ধ রিকশা চালকের ছবি সহ একটি পোস্ট দেন। তার পোস্টের সূত্র ধরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরি জীবির পাশাপাশি সনাতন ধর্মাবলম্বী এক শিক্ষা কর্মকর্তা ব্যাটারি চালিত রিকশা কিনতে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। সেই অর্থ দিয়ে তাকে মিশুক কিনে দেয়া হয়। মিশুকের চাবি হস্তান্তর কালে কচাকাটা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জহুরুল হক, ভূরুঙ্গামারী সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম, সোনাহাট কলেজের অধ্যক্ষ বাবুল আক্তার, ভূরুঙ্গামারী সরকারি কলেজের প্রভাষক আজিজুর রহমান স্বপন ও আরিফুর রহমান শাহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা পেয়ে আবেগাপ্লুত বৃদ্ধ আনিছুর রহমান জানান, ‘খুব ভালো লাগতেছে, আল্লাহর রহমতে আয় রোজগারে আর সমস্য হইবে না। এলা আর কাইয়ো কবার নয় তোমার রিকশাত চইড়বার নই, এলা সগাই মোর রিকশাত চইড়বে বাহে। আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষ্যে আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রীকে নতুন পোশাক ও ঈদ সামগ্রী প্রদান করা হয়।