মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান ইউনিয়ন এর পশ্চিম বেলতলী এলাকার উদনা ছড়া ব্রীজের নীচ থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত বস্তাবন্দী নারীর পরিচয় ও খুনি সনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই নারীর নাম ডলি আক্তার (২৮)। সে ঝিনাইদ সদরের বর্ধনপুর গ্রামের মৃত ফেলু মন্ডলের মেয়ে। গত ১৮ মে উদনার ছড়া ব্রিজের নিচে একটি সাদা রংয়ের প্লাস্টিকের বস্তার ভেতর পা বাধা অবস্থায় ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার বেলা ১ টায় মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া সাংবাদিকদের কাছে এই হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক ঘটনা বর্ণনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খুনি যে বস্তায় ভরে লাশ ব্রীজের নীচে ফেলে দেয়, তদন্ত কর্মকর্তারা সেই বস্তার গায়ে লেখা অনিক নামের এক ব্যক্তির সন্ধান পায়। পুলিশ শহরের সাইফুর রহমান মার্কেটের পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায়ী দুই ভাই অনিক ও জুয়েলের কাছ থেকে জানতে পারেন গত ১৭ মে তার পূর্বপরিচিত মসুদ বস্তাটি সংগ্রহ করে। এ সূত্র ধরে পুলিশ মসুদ মিয়াকে আটক করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মসুদ মিয়া এই হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। মসুদ জানায় সে এলাকায় সুদের কারবার করে। ৭-৮ মাস পূবে পরিচয় সূত্রে ডলি আক্তারকে বিয়ে করে। এর আগে মসুদ আরো ৪টি বিবাহ করে। বিভিন্ন নারীর সাথে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে ডলির সাথে পারিবারিক কলহের সূত্রপাত হয়। এর এক পর্যায়ে গত ১৭ মে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওড়না পেঁচিয়ে ডলিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে। পরে একটি সিএনজি অটোরিক্সা করে লাশের বস্তা উদনাছড়া ব্রিজে নিয়ে যায়। এমসয় চলন্ত সিএনজি আটোরিক্সা থেকে বস্তাাটি ব্রিজের উপর হতে নিচে ফেলে দেয়। সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আশরাফুজ্জামান, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসান মোহাম্মদ নাছের রিকাবদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এ.বি.এম. মোজাহিদুল ইসলাম (পিপিএম), শ্রীীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুছ ছালেক, ওসি তদন্ত হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। শ্রীমঙ্গল থানা সুত্রে জানা যায়-সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ, ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুছ ছালেক, ওসি তদন্ত হুমায়ুন কবির এবং এস আই আসাদুর রহমান এই হত্যা রহস্য উদঘাটনে অভিযান পরিচালনা করে খুনিকে সনাক্ত ও আটকে সক্ষম হন। বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের ১৩ ঘন্টার মাথায় ১৮ মে রাত ৩টার দিকে একটি বস্তার গায়ে লেখা এক ব্যক্তির নামের সূত্র ধরে পুলিশ তার স্বামী মসুদ মিয়াকে ১৮ মে রাত ৩টার দিকে শ্রীমঙ্গল থানাধীন রামনগরস্থ তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়। সে উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত এখলাছ মিয়র ছেলে।