স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও অরক্ষিত ও অবহেলায় পড়ে আছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন বধ্যভূমিগুলো। এখনও অনেক চিহ্নিত জায়গা গুলোতে নির্মাণ করা হয়নি কোনো স্মৃতিফলক। বর্তমান সরকারের আমলে দেশের অনেক পরিবর্তন হলেও অত্র এলাকার বধ্যভূমিগুলোর কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় ঐসকল বধ্যভুমি গুলোকে চিহ্নিত করে স্মৃতিফলক নির্মান করতে দাবী দানিয়েছেন দুর্গাপুরবাসী। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, স্মৃতিফলক নির্মান নিয়ে অনেকের মাঝে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলার অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার সাধারণ মানুষ। স্মৃতিফলক নির্মিত না হওয়ায় অত্র এলাকার ছোট-বড় ০৫টি বধ্যভূমির অধিকাংশই হারিয়ে যেতে বসেছে। উপজেলার বিরিশিরি, গাওকান্দিয়া ও কুল্লাগড়া ইউনিয়নে সীমান্তবর্তী বিজয়পুর ও আরাপাড়া এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় এলাকার আলবদর ও রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী নিরীহ ও মুক্তিকামী অসংখ্য বাঙালিকে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে এসব বধ্যভূমিতে ফেলে রাখত। ১৯৭১ সালে পাকসেনারা অসংখ্য মা-বোনকে নির্যাতনের পর হত্যা করে বিরিশিরি এলাকায় মাটিতে গনকরব দিয়ে কিছু লাশ সোমেশ্বরী নদীতে ভাসিয়ে দিতো। অগণিত শহীদের রক্তে ভেজা এসব জায়গা সংরক্ষণের অভাবে মুছে যেতে বসেছে। স্মৃতি ফলকের বীর শহীদদের নাম গুলো মুছে যেতে বসেছে। অনেকেই এসব স্থান সহ আশপাশের জায়গা গুলো অবৈধ দখলের পাঁয়তারা করছে। অযতœ আর অবহেলায় পড়ে থাকলেও তা সংস্কার সহ নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও দুর্গাপুর পৌরসভার কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার সর্বস্তরের জনগন। এ নিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সোহরাব হোসেন তালুকদার বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বিভিন্ন সময়ে বধ্যভুমি গুলো রক্ষার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে অনুরোধ জানিয়েছি। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসন এ গুলো রক্ষায় নানা উদ্দ্যেগ গ্রহন করলেও করোনার কারনে এ উদ্দ্যেগ ঝিমিয়ে পড়েছে। বধ্যভুমি রক্ষা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব-উল-আহসান যুগান্তর কে বলেন, আমি গর্বিত এই দেশে জন্মগ্রহন করে। বাংলাদেশে এখনো অনেক মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রয়েছে যা এখনো সংরক্ষন করা হয়নি। কালের আবর্তে অনেক মুক্তিযোদ্ধাগনও হারিয়ে যাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে উপজেলা প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যে নানা প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই অতি শীঘ্রই বদ্ধভুমি রক্ষার কাজ শুরু করবো।