রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০১ অপরাহ্ন

সিটির স্বপ্নভঙ্গ, ইউরোপ সেরা চেলসি

স্পোর্টস ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ মে, ২০২১

ধারে-ভারে এগিয়ে ছিল ম্যানচেস্টার সিটিই। কিন্তু পারলো না গার্দিওয়ালার শিবির। উল্টো বাজিমাত করলো চেলসি। কাই হাভার্টজের একমাত্র গোলে ইউরোপ সেরার তকমা গায়ে লাগালো দ্য ব্লুজরা। পোর্তোর এস্তাদিও দো দ্রাগাওয়ে শনিবার অল ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানসিটিকে ১-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে চেলসি। ২০১২ সালে দ্রগবাদের আমলে প্রথম ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি। অন্যদিকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ফাইনালে উঠে আসা ম্যানসিটির হলো স্বপ্নভঙ্গ। অস্পর্শ থাকলো মৌসুমে ট্রেবল জেতা। ম্যানসিটি অধ্যায়টা অশ্রু দিয়ে সমাপ্তি টানলেন সার্জিও অ্যাগুয়েরো। সাফল্যের হাসি পিএসজি থেকে ছাটাই হওয়া চেলসির কোচ টুমাস টুখেলের।
ফাইনালে আসলে সিটির ছান্দসিক রূপ দেখা যায়নি। বল দখলে আধিপত্য থাকলেও গোল পোস্টে মাত্র একটি শট নিতে পেরেছে দলটি। সেখানে দুটির মধ্যেই একটিতে সফল চেলসি। সিটি কর্নার আদায় করেছে তিনটি, চেলসি একটি। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে শুরু ম্যাচ। তবে উল্লেখযোগ্য আক্রমণ আসছিলই না। প্রথমার্ধে সিটি ছিল নিষ্প্রভ। ৪২ মিনিটে চেলসি পায় একমাত্র জয়সূচক গোলটি। গোলরক্ষক মেন্ডির বাড়ানো বল মাঝমাঠে পেয়ে সুযোগ বুঝে হাভার্টজের উদ্দেশে থ্রু পাস বাড়ান ম্যাসন মাউন্ট। কী বুঝে পোস্ট ছেড়ে বক্সের বাইরে বেরিয়ে যান এডেরসন, ওয়ান-অন-ওয়ানে দারুণ এক টোকায় তাকে ফাঁকি দিয়ে ফাঁকা জালে বল পাঠান হাভার্টজ (১-০)। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ২০তম ম্যাচে এসে প্রথম গোলের দেখা পেলেন তরুণ এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ২০১৩ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ইলকাই গিনদোয়ানের পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপ সেরার আসরে নিজের প্রথম গোলটি করলেন ফাইনালে।
প্রথাগত কোনো স্ট্রাইকার ছিল না সিটির শুরুর একাদশে। ‘ফলস নাইন’ হিসেবে কেভিন ডে ব্রুইনেকে খেলান গার্দিওলা। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটে রুডিগারের ফাউলে চোট পেয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার জায়গায় নামেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার গাব্রিয়েল জেসুস। ৮০ মিনিটে আক্রমণের ধার বাড়াতে স্টার্লিংকে তুলে ক্লাবের রেকর্ড গোলদাতা আগুয়েরোকে নামায় সিটি। কিন্তু কোনো কৌশল কাজে দেয়নি। ৯০ মিনিটে গোলের দেখা পেতে পারত সিটি। কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকতে পারেননি ফোডেন। অতিরিক্ত সাত মিনিট দেয়া হয়েছিল ইনজুরি টাইম। এ সময়টা সিটি চেষ্টা করে প্রাণান্তকর। কিন্তু সিটি শিবিরে হতাশা কাটেনি। শেষ বাঁশি বাজার পর মাঠে নিশ্চল দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকেন অ্যাগুয়েরো। মাটিতে শুয়ে সবুজ ঘাসে মুখ লুকান অনেকে। কোমরে হাত দিয়ে শিষ্যদের এমন দৃশ্য আহত চোখে দেখেন কোচ গার্দিওলা।
অবশেষে মূল্যবান গোলটিই করলেন চেলসির সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়: ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। শনিবার রাতে ইংল্যান্ডেরই আরেক ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দলটি।
ম্যাচের স্কোরলাইন আরও বড় হতে পারত চেলসির পক্ষে। কিন্তু একের পর এক গোল মিস করে গেছেন দলের জার্মান ফরোয়ার্ড টিমো ওয়ের্নার। অবশ্য শেষ পর্যন্ত আরেক জার্মান কাই হ্যাভার্তজের করা একমাত্র গোলেই জয় পেয়েছে চেলসি। চলতি মৌসুমে চেলসির সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় ২১ বছর বয়সী কাই হ্যাভার্তজ। জার্মান ক্লাব বেয়ার লেবারকুসেন থেকে তাকে দলে পেতে ৮০ মিলিয়ন ইউর গুনতে হয়েছিল চেলসিকে।
কিন্তু সে তুলনায় পুরো মৌসুমে তেমন পারফরম্যান্স উপহার দিতে পারেননি হ্যাভার্তজ। অবশ্য ম্যাচের শুরুর একাদশে ছিলেন ২১ বার, সবমিলিয়ে খেলেছেন ৪৪টি ম্যাচে। যেখানে ৯ গোল ও ৯ এসিস্ট করতে পেরেছেন তিনি। সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়নস লিগে চেলসির হয়ে ১১ বার মাঠে নেমেছেন হ্যাভার্তজ। আগের ১০ ম্যাচে একবারও গোলের দেখা পাননি তিনি। শনিবার রাতে আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচেই তিনি বোকা বানালেন ম্যান সিটির রক্ষণকে।
পুরো আসর জুড়ে কোনো গোল না করে, চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালেই প্রথম গোল করলেন চেলসির সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়। সবশেষ ২০১৩ সালের আসরে ফাইনালেই নিজের প্রথম গোল করেছিলেন আরেক জার্মান ফুটবলার ইল্কায় গুন্ডোগান। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে ফাইনাল ম্যাচে গোল করা ১১তম কনিষ্ঠ ফুটবলার হ্যাভার্তজ। ম্যাচের দিন তার বয়স ২১ বছর ৩৫২ দিন। সবচেয়ে কম ১৮ বছর ৩২৭ দিন বয়সে ফাইনালে গোল করার রেকর্ড প্যাট্রিক ক্লুইভার্টসের। এছাড়া জার্মানির প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে জার্মানির বাইরে অন্য দেশের ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে গোল করেছেন হ্যাভার্তজ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com