বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমাদের পরিচয় আমরা ইসলামী আন্দোলনের কর্মী। আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ায় ইসলামী খেলাফাত দানের ওয়াদা করেছেন। সেই শর্ত পূরণের লক্ষ্যে আজ সর্বত্র সৎ ও যোগ্য লোক তৈরীর সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ইসলামী নেতৃত্বের জন্য একদিকে যেমন ইসলামের মূল উৎস কুরআন-হাদীসের সরাসরি জ্ঞান প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন আধুনিক জীবন ও জগত সম্পর্কীয় সমস্যা সমাধানের জ্ঞান। জামায়াতে ইসলামী সংগঠনকে এ সমস্যা সমাধানের জন্য একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা পালন করতে হবে। সমাজের রেডিমেট নেতৃত্ব যেমন সমস্যার সমাধান নয়, তেমনি এজন্য আসমান থেকেও নেতৃত্ব নাযিল হবে না, পাঁতাল ফুড়েও বের হবে না। এই সমাজের সচেতন অংশের মধ্য থেকে মৌলিক মানবীয় গুনাবলী সম্পন্ন লোকদের রাসূলের তরিকায় যথার্থ প্রশিক্ষণদানে এবং মাঠে ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা পালনের মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। মনে রাখতে হবে ইসলামী সমাজ বিপ্লবের লক্ষ্যে পরিচালিত আন্দোলনের প্রধান কাজ নেতৃত্বের উপযোগী লোক তৈরী। আল্লাহর রাস্তায় জান-মাল দিয়ে আন্দোলনের শরিক লোকদেরকে যোগ্যতা অর্জনের জন্যে পরিশ্রম ও নিরলস সাধনা করতে হবে। সেই সাথে কাতর কন্ঠে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর খালিশপুর পশ্চিম ও পূর্ব থানার কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। সম্মেলনটি ভার্চুয়াল জুম এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
খুলনা মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ও খালিশপুর পশ্চিম থানা আমীর হাফেজ আবুল বাশারের সভাপতিত্বে ও খালিশপুর পূর্ব থানা সেক্রেটারি মো. সোহেল রানার পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মহানগরী নায়েবে আমীর মাস্টার শফিকুল আলম, মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান।
সেক্রেটারি জেনারেল আরো বলেন, বাংলাদেশে ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান অথচ এই সমাজকে তার আকিদা বিশ্বাসের জায়গা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য সীমাহীন ষড়যন্ত্র চলছে। একজন মুসলমানের পারিবারিক জীবন, সমাজের সাথে তার ব্যবহার, মানুষের কল্যাণের জন্য সে কি ভূমিকা রাখবে বা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহপাক মুসলিম হিসেবে তাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সবকিছু ভুলিয়ে রাখার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র বিদ্যমান। আমরা আল্লাহ তায়ালার গোলামী করার জন্য নিবেদিত। এ জন্য কুরআনের বিধানের আলোকে নিজেকে তৈরি করে দেশ, সমাজ ও জাতি গঠনে প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাবো। যারা সব সময় আমাদের বিরোধিতা করছেন, আমরা তাদেরকে আমাদের বন্ধু, ভাই-বোনের মতো মনে করি। তাদের হেদায়াতের জন্য আমরা মহান রবের কাছে দোয়া অব্যাহত রাখবো।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনা মহানগরী শহীদদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, যে সকল ভাইদের দাওয়াত পেয়ে এ শহীদি কাফেলায় শরীক হয়েছিলাম আজ তাদের মধ্য থেকে অনেকেই আমাদের মাঝে নেই। খুলনা মহানগরীর শহিদীরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এ মহানগরীকে উর্বর করে রেখে গেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাদেরকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান দান করুন।