“ঐ দেখা যায় তাল গাছ ঐ আমাদের গাঁ, ঐখানেতে বাস করে কানা বগীর ছা” আবার কবি বলেছে “তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাঁড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে” এমন অনেক ছড়া লিখেছেন বাংলার কবি, সাহিত্যের নায়েকরা। তালে শাঁসের লিখনী তালগাছ নিয়ে। ঘরে এখন বকের ছানা থাক বা না থাক চাঁদপুরের সাচার, নয়াকান্দি, কচুয়া, রহিমানগর, জগৎপুর, মতলব, নায়ারগাঁও, নারায়নপুর, আর্শি¦নপুর, সুজাতপুর, দূর্গাপুর, ইসলামপুর, ছেঙ্গারচর, মুন্সীরহাট, হাজিগঞ্জ, বাকিলা, মহামায়া, বলাখাল, শুয়ারোল, মাঝিগাছা, পালাখাল, রাগদৈল, পাথৈরসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন কঁচি তালের পসরা বসেছে। মধু মাসে এ ফলকে কেউ বলে তালের শাঁস, কেউ বলে তালের কুঁই, কেউবা বলে তালের আঁটি। জৈষ্ঠ মাস মধু মাস নানান রকম বাহারী সব ফলের পাশাপাশি জেলার ছোট বড় সব বাজারগুলোতে উঠেছে কঁচি তালের শাঁস। প্রথম অবস্থায় কঁচি তালের শাঁসের কদর বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি। প্রতি পিছ তালের শাঁস বিক্রি হচ্ছে ১০/১৫ টাকায়। আর এ অবস্থায় কঁচি মিষ্টি মধুর তালের শাঁসের স্বাদ নিতে পারছেনা অনেকেই। গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালের শাঁস অনেক উপকারী এবং অনেক গুনাগুন। তাই জৈষ্ঠের এ মধু মাসে বাজারে নানা ফল উঠলেও সব জায়গায় জনপ্রিয় এ তালের শাঁস। একজন বিক্রিতা শাঁস কেটে তুলতে তুলতে আরো অনেক ক্রেতারা দাঁড়িয়ে থাকে তালের শাঁস নিতো। এ মৌসুমে অনেক হতো দরিদ্র মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতে প্রতি বছরই তালের শাঁস বিক্রি করে। চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার সাচার বাজারে তালের শাঁস বিক্রেতা পাথৈর গ্রামের মৃত আঃ ছাত্তারের ছেলে সুজন মিয়া আমাদের এ প্রতিবেদকে জানান। বৈশাখ মাসে থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত এ দুই মাস চলবে তালের শাঁসের বিক্রি। প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ তালের শাঁস বিক্রি করে। এক একটি তালের শাঁস ১০/১৫ টাকা করে বিক্রি করে। সারাদিন তালের শাঁস বিক্রি করে ৫শ’/ ৬শ’ টাকা লাভ হয়। তালের শাঁস বিক্রি করে মা, বাবা ভাই বোন সহ দুই সন্তান, স্ত্রী আমি আমার পরিবারের এ আট জনের সংসার ভালোই চলে যায়। তালের আদি বাড়ি কিন্তু আফ্রিকা। এটি বিদেশি ফল হলে ও বহুল চাষাবাদে এটি এখন বাংলাদেশের মৌসুমী ফলের স্থান দখল করেছে। তালের পুষ্টি গুন ও অনেক। তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে বলে চিকিৎসকরা জানান। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, এ ও বি কমপ্লেক্সসহ নানা ধরনের ভিটামিনও রয়েছে। তালের শাঁসে থাকা একটি এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমাত বাঁরিয়ে দেয়। কঁচি তালের শাঁস রক্ত শূন্যতা দূর করে বলে চিকিৎসকরা আমাদের এ প্রতিনিদিকে জানান। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়াতে সাহায্য করে বলে চিকিৎসকরা আরো জানান।