শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভোটার তালিকা তুলে দেয়া হবে ‘নগ্ন হামলা’

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ জুন, ২০২১

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নিয়ন্ত্রণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে গেলে তা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনরা। এর মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। ইসির সঙ্গে আলোচনা না করে এ ধরনের সিদ্ধান্তকে ‘নগ্ন হামলা’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন তারা।
গতকাল রোববার (৬ জুন) সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘সরকার কর্তৃক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার উদ্যোগ ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে অংশ নিয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এসব মন্তব্য করেন। আজ সকালে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কোথায় নেমে গেছে এ বিষয় থেকে বোঝা উচিত। তারা যে সরকারের জন্য ভোটারদের সাথে অন্যায় করেছে সে সরকার তাদের সঙ্গে কী আচরণ করছে সেটি পরিষ্কার হচ্ছে। ইসির হাতে ভোটার তালিকা থাকলেও অবাক হবো না। কারণ তাদের হাতে এটা থাকা না থাকায় কিছু যায় আসে না। নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে লেসার ইভিল (কম দুর্বৃত্ত)। তারা বাজে নির্বাচন করলেও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘যারা জঘন্য নির্বাচনের এনফোর্সার ছিল তাদের হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র গেলে তা হবে আশঙ্কাজনক। আগামী নির্বাচন আরও নিপীড়নমূলক হওয়ার পরিকল্পনা হতে পারে। পুলিশের কাছে তথ্য গেলে রাজনৈতিকভাবে তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। পুলিশের কাছে দায়িত্ব দিলে হয়রানি বাড়বে।’ ‘নির্বাচন কমিশনের মেরুদ- আছে কি-না’ তা দেখার জন্য তিনি অপেক্ষায় রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন এই অধ্যাপক অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘গণতন্ত্র না থাকলে নাগরিকদের সরকার তোয়াক্কা করে না। ন্যূনতম সৌজন্যবোধ সরকারের উচ্চ পর্যায়েও পাই না। পরের নির্বাচন যে সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠু হবে না এর প্রস্তুতিপর্ব সরকারের মাধ্যমে শুরু হয়েছে। সামনের নির্বাচন যেন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং কোনো অনিয়ম যেন চোখে না ধরা দেয় সে ব্যবস্থা হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার মাধ্যমে।’
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা আওয়ামী লীগেরই দাবি ছিল। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়কের সময় ছবিযুক্ত ভোটার তালিকার কাজ সফলভাবে শুরু হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের নিয়ন্ত্রণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে গেলে ইসির মাঠ পর্যায়ের দফতরগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে দিতে হবে। আর ইসির সঙ্গে আলোচনা না করে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে ইসিকে নিচু করা হচ্ছে।’
সাংবাদিক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘সরকার নির্বাচন কমিশনকে অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের বাইরে কিছু মনে করে না। নির্বাচন কমিশনও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে পছন্দ করে না। তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনভাবে অনুগত প্রতিষ্ঠানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করেনি সরকার।’
জাতীয় পরিচয়পত্রের নিয়ন্ত্রণ ইসির কাছ থেকে কেড়ে নেয়াকে ‘নগ্ন হামলা’ উল্লেখ করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ডেটাবেজ সরকারের নিয়ন্ত্রণে গেলে নিজেদের পছন্দের লোককে যুক্ত করবে, অপছন্দের লোককে বাদ দেবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে গেলে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা আসবে। দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হবে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন পুরোপুরি ইভিএমের মাধ্যমে হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। আমরা দেখেছি, ইভিএমে ফল নিয়ন্ত্রণ করা যায়। চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুইবার ফল ঘোষণা হয়েছে আমরা দেখেছি। জাতীয় পরিচয়পত্র সরকারের নিয়ন্ত্রণে গেলে তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে।’ ‘মধ্যরাতের ভোটে নির্বাচিত’ সরকারের পক্ষে যেকোনো কিছু করা সম্ভব বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সংলাপে সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটি এম শামসুল হুদা, ড. হামিদা হোসেন, বিচারপতি এম এ মতিন, ড. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বিশিষ্ট রাষ্ট্র বিজ্ঞানী রওনক জাহান, সাবেক সচিব আব্দুল মণ্ডল, ড. সি আর আবরার, আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদসহ সুজন নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ অংশ নেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com