শেরপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত দুটি ব্রীজ তৈরির কারণে ভোগান্তি কমলো হাজারো মানুষের। পৃথক দুইটি কাঠের ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী আদিবাসী গ্রাম হারিয়াকোনায়। যার ফলে এ গ্রামের মানুষ দেখছে নতুন স্বপ্ন। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের প্রতিষ্ঠান ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন ও কারিতাসের সহযোগিতায় গ্রামবাসীদের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মাণ শেষ হয়েছে ব্রিজ দুটির। ব্রিজ বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও হারিয়াকোনা মিশনারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিপুন ম্রং ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্রিজ দুটি নির্মাণ হওয়ায় এখন থেকে নির্বিঘ্নে চলাচল করবে সব ধরনের যানবাহন। এর আগে এখানে প্রতি বর্ষায় সড়ক ও ঝর্নার পানি বাড়ার কারণে অবস্থা খুব খারাপ হতো। ওই সময় স্কুলে যেতে পারতোনা স্কুল,কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। গর্ভবতী মা ও গুরতর অসুস্থদের চিকিৎসা সেবাও অসম্ভব হয়ে পড়তো। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে পাহাড়ি ঝর্নার ওপর ব্রিজ না থাকায় চলাচলে ভোগান্তিতে থাকতো কয়েক হাজার মানুষ। কিন্তু এতদিন পর স্বেচ্ছাশ্রমে ব্রিজ দুটি নির্মিত হওয়ায় সব সমস্যার সমাধান হলো। স্থানীয় গ্রামের বানিন্দা মিঠুন চিরান বলেন, শেরপুরের শ্রীবরদীতে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি জনপদ হারিয়াকোনা গ্রামে ৩/৪ হাজার আদিবাসী লোকের বসবাস। এখানে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বছরে উৎপাদিত হয় লাখ লাখ টাকার সবজি। কিন্তু সীমান্তবর্তী এ গ্রামটি পাহাড়ী ঝরনা বয়ে যাওয়ায় দেশের অন্যান্য স্থান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু ঝরনার ওপর কোন ব্রিজ না থাকায় শুকনো মওসুমে অনেক কষ্টে মালামাল আনা নেয়ার জন্য ভ্যানগাড়ী, মোটরসাইকেল ও সাইকেল ব্যবহৃত হতো। এখন ব্রীজ দুটি নির্মিত হওয়ায় আমাদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হলে। শ্রীবরদীতে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের প্রতিষ্ঠান ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান প্রাঞ্জল এম সাংমা জানান, আমরা গত জানুয়ারী মাসে স্থানীয়ভাবে একটি সমাবেশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি দেই। এরপর উপজেলা প্রশাসন থেকে আমাদেরকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়। কিন্তু ওই সহায়তা দিয়ে পাহাড়ি ঝর্নার উপর দুটি ব্রীজ নির্মান দূরহ ছিল। তাই আমরা উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন ও কারিতাসের সুফল প্রকল্পের বিভিন্ন ক্লাষ্টারের সদস্য এবং গ্রামবাসীগণ কাঠের ব্রীজ নির্মানের জন্য আরো এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা এখানে যোগ করি। এর ফলে আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা ও দূর্ভোগের অবসান হলো। শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়ন এবং এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে ব্রিজ দুটি নির্মিত হয়েছে। এখন থেকে এ এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের কষ্টের অবসান হলো।