একমাসের বেশি সময় ধরে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী কিছুদিনের মধ্যে তার বাসায় নেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকেরা। শনিবার (৫ জুন) বিকালে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ তথ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের অবহিত করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য পাওয়া গেছে। স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নিয়মিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর হামলার ঘটনাটি ফলোআপ করা হয়েছে। এছাড়া, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপরও কথা বলেছেন কোনও-কোনও সদস্য। স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, বৈঠকে বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক বিষয়টি তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। তার শারীরিক উন্নতির বিষয়টি তিনি সদস্যদের জানান। একইসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার কিডনি ও হার্টে জটিলতা থাকলেও কিছুদিন পর তাকে বাসায় নেওয়া যাবে, এমন সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তারা জানান, কিছুদিনের মধ্যে বাসায় যাওয়ার ছাড়পত্র পাবেন বেগম জিয়া।
জানতে চাইলে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ম্যাডামের হার্ট ও কিডনি রোগের সমস্যা তো রয়ে গেছে। আর বাসায় ফেরার বিষয়টি চিকিৎসকেরাই ঠিক করবেন। তারা যখন বলবেন, তখন বাসায় যাবেন।’ চেয়ারপারসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একজন নির্ভরযোগ্য দায়িত্বশীল জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো ও ক্রমাগত উন্নতির দিকে। আশা করা যায়, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যেকোনও দিনই তিনি বাসায় ফিরবেন।
এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা রহমান বলেন, ‘তার শারীরিক কিছুটা উন্নতি হয়েছে। যেজন্য কেবিনে নেওয়া হয়েছে। এখন কবে, তাকে বাসায় আনা হবে, এটা আমি এখনই বলতে পারছি না। চিকিৎসকেরা ভালো জানবেন।’ এ ব্যাপারে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের একাধিক সদস্যকে ফোন করা হলে তারা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে খালেদা জিয়ার। ১৫ এপ্রিল সিটি স্ক্যান করান তিনি। অক্সিজেনজনিত সমস্যা দেখা দিলে ২৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ২৮ এপ্রিল ব্যক্তিগত ও এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ মে খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট নেগেটিভ আসে। এক মাস পর গত ৩ জুন খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে বিশেষ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। ৫ মে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে লিখিত চিঠি দেন খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার। যদিও সরকার তাতে এখনও সাড়া দেয়নি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘ম্যাডামের বিদেশে চিকিৎসা দেওয়াই এখন সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কিন্তু বিষয়টি ঝুলে আছে। সরকার তো বিষয়টিকে আটকে রেখেছে।’ প্রসঙ্গত, শনিবার অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির আলোচনা ও সিদ্ধান্ত জানিয়ে আগামীকাল রবিবার (৬ জুন) সংবাদ সম্মেলন বা প্রেস রিলিজ পাঠাতে পারে বিএনপি।