শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের ফোর লেনের জন্য জমি অধিগ্রহনের খবরে সড়কের দুইপাশে গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক স্থাপনা। অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় টাকা আত্মসাত্মের উদ্দেশ্যে রাতারাতি সেখানে গড়তোলা হচ্ছে মুরগির খামার, গাছ বাগান, দোকানপাট ও ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন প্রকার কাঁচাপাকা স্থাপনা। এর নেতৃত্বে কাজ করছে স্থানীয় একটি সক্রীয় দালাল চক্র। যারা এলাকার লোকজনকে এসব স্থাপনা নির্মানে উৎসাহিত করছে। সড়ক ও পথ বিভাগ বলছে তড়িঘড়ি করে নির্মিত এসব স্থাপনার বিপরীতে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দেয়া হবেনা। শরীয়তপুর জেলা সড়ক বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থার পর ২০২০ সালের মার্চ মাসে শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কটিকে ফোর লেনে উন্নীতকরণ কাজ শুরু হয়। শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ঐ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধন করেছেন। ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর ফেরীঘাট থেকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার মনোহর বাজার পর্যন্ত ৩১কিলোমিটারের ফোর লেনের সড়কটি নির্মানে বরাদ্দ হয়েছে ৮৫৯ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী বর্তমানে ঐ সড়কের নরসিংহপুর ফেরীঘাট থেকে বালারহাট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কয়েক মাস আগে ঐ সড়কের বাকী অংশে জমি অধিগ্রহনের কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারি নিয়মানুযায়ী অধিগ্রহকৃত এসব জমি ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ গুন টাকা মালিককে পরিশোধ করা হবে। শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জমি অধিগ্রহনের খবর পেয়ে শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কের বালারহাট টু কাশিমপুর অংশে দুইপাশে গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক স্থাপনা। সড়কের ধার ঘেঁষে কেউ পাকা ভবন, কেউ আধাপাকা ভবন সহ ছোট ছোট গাছ রোপন করে বাগান তৈরি করছে। সব মিলিয়ে গত কয়েকদিনে সেখানে অর্ধশতাধিক নতুন স্থাপনা নির্মিত হয়েছে এবং আরো নতুন ভবনের নির্মান কাজ চলছে। এমন ঘটনা করেছিল পদ্মাসেতুর জমি অধিগ্রহনের সময়। অনেকেই সেখানে অস্থায়ী স্থাপনা, বৃক্ষ রোপন করে অধিক মুনাফা লাভে তারা মত্ত হয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা তছরুপ করেছে। যে কারনে তাত পল্লীর জমি অধিগ্রহনের সময় একই কাজ করতে শুরু করেছিল জমির মালিকগন। এ বিষয় প্রশাসনের নজরে পড়লে তা ভন্ডুল হয়ে যায়।এসব কাঁচাপাকা স্থাপনা নির্মানে উৎসাহিত করছে একটি সক্রীয় দালাল চক্র। এই চক্রের মূলে রয়েছে ডিএমখালী ইউনিয়নের গাজী কান্দির বাসিন্দা জান শরীফ হাওলাদারের ছেলে আহমদ আলী। যিনি ঐ এলাকায় জমি-জমার দালাল হিসেবে পরিচিত। তিনি নিজেও মহাসড়কের পাশে একাধিক স্থাপনা গড়ে তুলেছেন।মহাড়কের পাশে রাতারাতি স্থাপনা নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে ও আহমদ আলী ও তার চক্রের অন্যন্য সদস্য মাঈনুদ্দিন ও পারভেজ সংবাদকর্মীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে শাবল ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। তাদের শাবলের আঘাতে সংবাদ কর্মীদের ক্যামরা ক্ষতিগ্রাস্থ হয়। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগীতায় সংবাদ কর্মীরা রক্ষা পায়। স্থাপনা নির্মানকারী অপর এক ব্যাক্তি সাঈদুর রহমান রতন বলেন, মহাসড়কের জমি অধিগ্রহনের বিষয়ে আমরা এ পর্যন্ত কোন প্রকার নোটিশ কিংবা নির্দেশনা পাইনি। তাই নিজেদের জমির উপর ভবন নির্মান করছি। সরকারি নির্দেশনা পেলে আমি আমার টাকা নষ্ট করতে যেতাম না। এ বিষয়ে শরীয়তপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেদোয়ানুর রহমান বলেন, মহাসড়কটির দু-পাশের সকল অংশ আমরা ভিডিও করে রেখেছি। নতুন কোন স্থাপনা নির্মান করা হলে আমরা সেটা কোন ভাবেই মেনে নেবো না। এমনকি এর সাথে যদি কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।