গতকাল সোমবার (২১ জুন) দুপুর ১টা। পুরান ঢাকার মাজেদ সরদার রোড। হঠাৎ আকাশ কালো করে বৃষ্টি শুরু হলো। ২টা বাজার আগেই বৃষ্টির পানিতে মাজেদ সরদার রোড, বাংলাদেশ মাঠ, নাজিরা বাজার চৌরাস্তা ও সিক্কাটুলী এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এতে অনেক দোকানপাট ও বাসা-বাড়ির নিচতলায় পানি ঢুকে যায়।
গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, বংশালের বাংলাদেশ মাঠের চারপাশের সড়কে প্রায় হাঁটু পানি জমে রয়েছে। এই পানি ভেঙে চলাচল করছেন পথচারীরা। এর মধ্যে সিক্কাটুলী রাস্তা, নাজিরা বাজার চৌরাস্তা এলাকায় জলাবদ্ধতার পরিমাণ বেশি। তবে এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে সাত রওজা চৌরাস্তায় নতুন পাইপলাইন বসাতে দেখা গেছে। বর্ষায় এই খোঁড়াখুঁড়ির কারণে নাগরিকদের চলাচলেও ভোগান্তি পোহাতে দেখা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের গাফিলতিতে এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। একবার এক ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হলে সড়কে হাঁটু থেকে কোমর পানি জমে যায়। এতে সড়কে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। এই পানি সরতে এক থেকে দুদিন সময় লেগে যায়। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশনের তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
মাজেদ সরদার রোডের বাসিন্দা মাহতাব উদ্দিন বলেন, এখন বর্ষা মৌসুমে দুই-একদিন পরপরই বৃষ্টি হচ্ছে। এমন অবস্থায় এক মাসের বেশি সময় ধরে এই এলাকায় জলাবদ্ধতা লেগে আছে। নোংরা পানির কারণে প্রয়োজনেও বাসা থেকে বের হওয়া সম্ভব হয় না। অথচ সিটি করপোরেশনের তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
সিক্কাটুলীর বাসিন্দা আক্তার হোসেন বাসা থেকে রিকশায় বঙ্গবাজার যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছেন। কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশ মাঠ সংলগ্ন মাজেদ সরদার কমিউনিটি সেন্টারের নিচে আশ্রয় নেন।
আলাপকালে তিনি বলেন, বংশাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনের দূরত্ব এক কিলোমিটারের চেয়েও কম। অথচ এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে সংস্থাটির কোনো মাথাব্যথা নেই। এখন নাগরিকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এতে এই এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
বংশাল থানা এলাকা ডিএসসিসির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। স্থানীয় কাউন্সিলর আউয়াল হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে তার ওয়ার্ডের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। প্রতিদিনই বাসিন্দারা মুঠোফোনে কল দিয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। বিষয়টি ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমার ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা লেগে আছে। ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়নি। এখন বৃষ্টির পানি সরতে পারে না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংশ্লিষ্টদের দাবি, পুরান ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে তারা একটি মেগা প্রকল্প নিয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় বংশালের বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে। বর্ষার মধ্যেই এ কাজ শেষ হবে। এরপর থেকে এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা হবে না।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মুন্সি মো. আবুল হাসেম জাগো নিউজকে বলেন, বংশালের জলাবদ্ধতা নিরসনে গত ৩০ মে থেকে নতুন পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে কাজ শেষ করতে পারব।