বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকের পর কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রেও একটি অভিন্ন নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এর ফলে এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় কর্মী নিয়োগে একটি নির্দিষ্ট মানদ- নির্ধারণ করে দেয়া হবে। সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে সেই মানদণ্ড অনুসরণ করে কর্মী নিয়োগ দিতে হবে। প্রথমবারের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী নিয়োগে বিধিবিধান জারির এই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করে মঞ্জুরী কমিশন। এ সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে যাতে একটা অভিন্ন নীতি থাকে, একটি নির্দিষ্ট মানদ- অনুসরণ করা হয়, আমরা সেটাই ঠিক করে দেবো। তারা আরো বেশি যোগ্যতার ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলে আমরা আপত্তি করব না। কিন্তু এই যোগ্যতার নিচে কাউকে নিয়োগ করা যাবে না।’
তিনি আরো বলেন, এখন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ইচ্ছামতো কর্মী নিয়োগ করে থাকে। ফলে অনেক সময় এ নিয়ে বিতর্কের তৈরি হয়। তিনি ধারণা করছেন, নিয়োগের নীতি নির্দিষ্ট করে দেয়ার পর এক্ষেত্রে কারো অনিয়মের সুযোগ থাকবে না। এই কমিটি নিয়োগের জন্য আবেদনের যোগ্যতা, নিয়োগের প্রক্রিয়া, পদোন্নতি ও চাকরিচ্যুতি করার নিয়ম নির্দিষ্ট করে দেবে। তবে পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ করতে বেশ সময় লাগবে বলে আভাস দিয়েছেন প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম। প্রায় পাঁচ বছরের প্রক্রিয়ার পর সম্প্রতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক নিয়োগে একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন। ২০১৬ সালের ১৫ মে ওই কমিটির কার্যক্রম শুরু হলেও এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চূড়ান্ত সুপারিশ শেষে এই নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে।
ওই নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষক পদের জন্য মাস্টার্স ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, এমন আগ্রহীরা আবেদন করতে পারবেন। সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেতে হলে তাকে তিন বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে যাদের এমফিল ডিগ্রি রয়েছে, তাদের এই অভিজ্ঞতা দুই বছর ও ডক্টরেট ডিগ্রিধারীদের এক বছরের থাকলেই চলবে। তবে ওই ব্যক্তিকে অবশ্যই কোনো স্বীকৃত জার্নালে কমপক্ষে তিনটি প্রকাশনা থাকতে হবে। সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদেও পদোন্নতির নিয়ম নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগে অভিন্ন নীতিমালার এই কমিটি গঠন করা হয়েছে এমন সময়ে, যখন বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক চলছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা পায়। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওইসব নিয়োগ বাতিল করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সূত্র : বিবিসি