মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন

কমলগঞ্জে চিকিৎসা অবহেলায় নারীর মৃত্যু ঃ বিচার চান স্বজনরা

শ. ই. সরকার জবলু মৌলভীবাজার :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও নার্সদের অবহেলায় নারী রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় আবারও ফুটে উঠেছে স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশা। গত ৩০ জুন বুধবার পেটে ব্যথা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নস্থিত ধর্মপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার কন্যা ১০ মাস বয়সী ১ সন্তানের জননী সুমি বেগম(২৪)। পরদিন ১ জুলাই বৃহষ্পতিবার সকালে তার পেটে ব্যথা আরও বেড়ে গেলে সুমির মা রাহেলা বেগম কর্তব্যরত নার্সকে ডাক্তার ডাকতে বলেন। জবাবে নার্স জানান- ডাক্তার আসবেন বিকাল ৫টার দিকে। এসময় সুমির মা-বাবা উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে মৌলভীবাজারে রেফার করার অনুরোধ জানালে নার্স বলেন- আপনাদের রোগী ভান ধরেছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন কমে যাবে, বলে নার্স চলে যান। দুপুরে রোগীর অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে নার্স অনিতা সিনহা ও মিডওয়াইফ রতœা মন্ডল রোগীর শরীরে ১টি ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর থেকে রোগীর নড়াচড়া বন্ধ হয়। বিকাল পর্যন্তই রোগীর নড়াচড়া না পেয়ে নার্সকে জানালে, তিনি ডাঃ মুন্না সিনহাকে নিয়ে আসেন। ডাঃ মুন্না সিনহা পরীক্ষা করে রোগীকে মৃতঃ ঘোষণা করেন। এসময় মৃতঃ মায়ের বুকের উপর তার দুগ্ধপোষ্য ১০ মাস বয়সী শিশুটি হয়তো দুধ পান করার জন্য মায়ের বুকের উপর মাথা রেখে কান্নাকাটি করছিল। মৃতঃ মায়ের বুকের উপর মাথা রেখে শিশুটির কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছিল হাসপাতাল কক্ষ। পরদিন ২ জুন শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় মৃতঃ সুমি বেগমের লাশ তার পিতৃগ্রাম রহিমপুর ইউনিয়নস্থিত ধর্মপুর গ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। জানাযায় উপস্থিত এলাকাবাসী এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্টাফ জানান- এখানে ডাক্তাররা নিয়মিত ডিউটি করেন না। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম ভূইয়ার বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে স্টাফদের মধ্যেও অসন্তোষ রয়েছে। মৃতঃ সুমি বেগমের মা রাহেলা বেগম বলেন- ডাক্তার ও নার্সের অবহেলার কারণে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। মৃতঃ সুমি বেগমের স্বামী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নস্থিত লামুয়া গ্রামের ইমরান মিয়া বলেন- বিনা চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর মৃত্যুর বিচার চাই। ডিউটি ডাক্তার ও নার্স বলেন- আমরা কোন অবহেলা করিনি এবং আমাদের কোন ত্রুটি নেই। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কবির বলেন- স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কেউ দায়ী হলে তদন্তক্রমে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডাঃ মাহবুবুল আলম ভূইয়া বলেন- কোন দুর্ঘটনা ঘটলে অনেকে অনেক কথাই বলে। তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তদন্তের আগে কিছু বলা যাবেনা। মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দীন মুর্শেদ জানান- ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেবে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com