শিক্ষাবর্ষের এই সময়ে শিক্ষার্থীদের যেখানে ক্লাস আর পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিই হতে পারেনি পৌনে চার লাখ শিক্ষার্থী। করোনার সংক্রমণের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির গুচ্ছ পরীক্ষাও এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য আবেদন করেছে তিন লাখ ৬৫ হাজার শিক্ষার্থী। করোনার কারণে ইতোমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে ভর্তি পরীক্ষা। সর্বশেষ গত সোমবার ভর্তিসংক্রান্ত কমিটির একটি সূত্র জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি হবে কি না তা নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এ দিকে গত প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে উচ্চ হারে বাড়ছে দেশে করোনোর প্রকোপ। এই অবস্থায় জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে সারা দেশে দেয়া হয়েছে কঠোর লকডাউন। এই লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৪ জুুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সব ধরনের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এসব পরীক্ষা আয়োজনের কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাও আপাতত হচ্ছে না। এ বিষয়ে শিগগিরই সভা ডেকে নতুন সিদ্ধান্ত জানানো হবে। গত সোমবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সদস্যসচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো: ওহিদ্দুজ্জামান জানিয়েছেন, করোনা এবং লকডাউনের কারণে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আপাতত হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়ে আপাতত নতুন কোনো সিদ্ধান্তও নেই আমাদের। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্তে যেতে পারছি না। তবে খুব শিগগিরই সবাইকে নিয়ে একটি অনলাইন মিটিং ডাকা হবে। তখন কোনো সিদ্ধান্ত এলে জানিয়ে দেয়া হবে।
সূত্র আরো জানায়, দেশে চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ১৯ জুন থেকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গত ১১ জুন তা স্থগিত করা হয়।
এ বিষয়ে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, পরিবর্তিত করোনার পরিস্থিতি বিবেচনায় আগেই ১৯ ও ২৬ জুন এবং ৩ জুলাইয়ের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমরা নতুন ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষাবিষয়ক টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর জানিয়েছেন, আমরা প্রাথমিকভাবে প্রায় পৌনে চার লাখ আবেদন পেয়েছি। এখন কবে নাগাদ এই ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে সেটি নিয়েই নতুন করে চিন্তাভাবনা করছি। সূত্রমতে, প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন করেছে তিন লাখ ৬৫ হাজার প্রার্থী। এর মধ্যে এ ইউনিটে বিজ্ঞান শাখায় রয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার, বি ইউনিটে মানবিক শাখায় এক লাখ সাত হাজার এবং সি ইউনিটের বাণিজ্য শাখায় ৫৮ হাজার প্রার্থী।