নতুনদের হাতে বড় দায়িত্ব। এটাই ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা রদবদলের মূল মন্ত্র। বাদ দেয়া হয়েছে হর্ষবর্ধন, রবিশঙ্কর প্রসাদ, প্রকাশ জাভড়েকরের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের। তারা যে মন্ত্রণালয় সামলাচ্ছিলেন, তা তুলে দেয়া হলো তুলনায় অনভিজ্ঞ ও তরুণদের হাতে। তবে এই তরুণ মন্ত্রীরা সবাই নরেন্দ্র মোদির বিশেষ আস্থাভাজন। করোনা সামলাবার বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করা হয়েছে মনসুখভাই মন্ডাভিয়াকে। মোদি নিজের রাজ্য গুজরাটের নেতা। ৪৯ বছর বয়সি এই নেতাকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণের পাশাপাশি কেমিক্যাল ও ফার্টিলাইজার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। এর আগে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মনসুখভাইয়ের কাছে রীতিমতো বড় দায়িত্ব তাতে সন্দেহ নেই।
আরো এক নতুন মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন মোদি। তিনি রেলমন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ও পেয়েছেন। এর আগে রেলমমন্ত্রণালয় ছিল পীযূষ গোয়েলের হাতে। তাকে বাণিজ্য, শিল্প, খাদ্য, গণবন্টন ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রেলমন্ত্রণালয় চলে যাওয়ায় পীযূষের গুরুত্ব সামান্য কমল। এর আগে বস্ত্র মন্ত্রণালয় ছিল স্মৃতি ইরানির হাতে। তাকে শুধু নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী করা হয়েছে। ফলে স্মৃতির ডানা ছাঁটা হয়েছে। নীতীন গড়করিরও ডানা ছাঁটা হয়েছে। তার হাতে এখন শুধু সড়ক পরিবহন ও হাইওয়ে মন্ত্রণালয় আছে। ছোট, মাঝারি ও মাইক্রো শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রণালয় তার কাছ থেকে নিয়ে নেয়া হয়েছে। অশ্বিনী বৈষ্ণব অবশ্য আইআইটি কানপুরের এমটেক এবং পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ। ফলে তার যোগ্যতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তিনি আগে জেনারেল ইলেকট্রিক, সিম্যানসের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তার হাতে একাধিক অতি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ভার দিয়েছেন মোদি। ফলে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে অশ্বিনী। অনুরাগ ঠাকুর এতদিন ছিলেন অর্থমন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী। ভারতে প্রতিমন্ত্রীদের হাতে বিশেষ ক্ষমতা থাকে না। তাদের দায়িত্বও তাই সীমাবদ্ধ। সেখান থেকে তাকে শুধু ক্যাবিনেট মন্ত্রীই করা হয়নি, তথ্য ও সম্প্রচার এবং ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের সময় অনুরাগ ঠাকুরই বিতর্কিত স্লোগান দিয়েছিলেন। রবিশঙ্কর প্রসাদ এতদিন আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এবার সেই মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছে কিরণ রিজিজুকে। রিজিজু আইনের স্নাতক। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসভাজন নেতা। শিক্ষামন্ত্রী করা হয়ছে ধর্মেন্দ্র প্রধানকে। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে দেয়া হয়েছে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়। তার বাবা মাধবরাও-ও একই মন্ত্রণালয় সামলেছেন। অমিত শাহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাশাপাশি সমন্বয় মন্ত্রণালয়ের বাড়তি দায়িত্ব পেয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের চারজনকে প্রতিমন্ত্রী করেছেন মোদি। নিশীথ প্রামাণিক, সুভাষ সরকার, জন বার্লা ও শান্তনু ঠাকুর। নিশীথ হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীনে কাজ করবেন। সুভাষকে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। জন বার্লা সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সূত্র : ডয়েচে ভেলে