সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন

কাশ্মীরে সংঘাতে দুই ভারতীয় সেনাসহ নিহত ৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে তিনটি আলাদা বন্দুকযুদ্ধে দুই ভারতীয় সেনাসহ ৮ জন নিহত হয়েছে। ভারতের দাবি, নিহত অন্য ছয় জন সন্ত্রাসী। বৃহস্পতিবারে সবচেয়ে বড় সংঘাতটি হয় লাইন অব কন্ট্রোলের কাছে। সেখানে বন্দুকযুদ্ধে দুই সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী ও দুই ভারতীয় সেনা নিহত হয়। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনীর একটি দল নিয়ন্ত্রণ রেখায় টহল দিচ্ছিল। এসময় সন্ত্রাসীরা হঠাৎ করে তাদের ওপর হামলা চালায়। শুরু করে গুলি, নিক্ষেপ করে হাত বেমা। পরে সেনাবাহিনীর আত্মরক্ষামূলক গুলিতে নিহত হয় সন্দেহভাজন দুই সন্ত্রাসী। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ২টি একে ৪৭ বন্দুক। খবর আল জাজিরা। এছাড়া দক্ষিণ কাশ্মীরে পুলওয়ামা ও কুলগামে আরও দুটি অভিযানে ৪ জন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। ভারতীয় পুলিশ বলছে, কুলগামে যে দুজন নিহত হয় তারা জাতীয় মহাসড়কে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছিল। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে শুরু হয় সংঘর্ষ। নিহত ৪ সন্ত্রাসীর নাম শাহবাজ আহমেদ শাহ, নাসির আইয়ুব পণ্ডিত, কিফায়াত সোফি ও ইনায়েত আহমেদ। এদের মধ্যে শাহবাজ জইশ ই-মোহাম্মদের সদস্য আর বাকিরা লস্কর ই-তৈয়বার সদস্য।
এর আগে গত ২ জুলাই ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার রাজপোড়া অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাকামী যোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন বিচ্ছিন্নতাকামী এবং একজন ভারতীয় সেনা। ভারতের দাবি, নিহত হওয়া বিচ্ছিন্নতাকামী পাঁচজন পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যবার সদস্য। এর আগে গত ১ জুলাই রাতে রাজপোড়া এলাকায় যৌথ অভিযান শুরু করে ভারতীয় বাহিনী। এ অভিযানে নিহত হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সদস্য ও পাঁচ সশস্ত্র যোদ্ধা। এদিকে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরেও সম্প্রতি নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। ৩০ জুন উপত্যকার কুলগ্রাম বনাঞ্চলে সেনাদের হামলায় সন্দেহভাজন তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। ১ জুলাই দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, চলতি বছর এ পর্যন্ত ৬১ জঙ্গি নিহত হয়। এর আগে গত ২৪ জুন দিল্লিতে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠক করেন উপত্যকার নেতারা। সেখানে কাশ্মীরকে ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের প্রায় দুই বছর পর এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। তবে কখন মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হবে তা খোলাসা করেননি নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, উপযুক্ত সময়ে তা ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিন ঘণ্টার এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আটটি দলের ১৪ জন নেতা। ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও লেফটন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা। কাশ্মীরের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লাহ, ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি। বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন,তাদের মোট পাঁচটি দাবি ছিল। অবিলম্বে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিধানসভা নির্বাচন দিতে হবে, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে ও আধিপত্য আইনে বদল আনতে হবে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির বলেন, কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হবে। কাশ্মীরের জনগণ তাদের বিশেষ মর্যাদার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে লড়াই চালিয়ে যাবেন, তাতে যত সময় লাগুক। ২০১৯ সালের আগস্টে ভারত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে। ফলে কাশ্মীর এতদিন যে বিশেষ অধিকার পেত তা খারিজ হয়ে যায়। একই সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যটিকে ভেঙে দুইটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। এর একটি হলো লাদাখ এবং অপরটি জম্মু-কাশ্মীর। অঞ্চলটির সার্বিক উন্নয়নের জন্যই ভারত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানায় নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার। সূত্র: আল জাজিরা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com