চলমান লকডাউন ও মহামারী করোনা ভাইরাস ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ায় কৃষিতেও এর প্রভাব পড়েছে। যার ফলে সবজি চাষে অন্যতম বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চাষিরা চরম হতাশায় ভুগছেন। পরিস্থিতি যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে উৎপাদিত সবজি কিভাবে বিক্রি করবেন সে চিন্তায় তারা দিশেহারা। স্থানীয় চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বড়বাড়িয়া, কলাতলা, হিজলা, শিবপুর, চিতলমারী সদর, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুর ইউনিয়ের মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগ লোকই কৃষি কাজের সাথে যুক্ত আছেন। তারা মাঠের জমিতে চিংড়ি চাষের পাশাপাশি ঘেরের পাড়ে ব্যাপক হারে প্রতি বছর সবজি চাষ করে থাকেন। এখানকার উৎপাদিত লাউ, কুমড়া, করলা, শশা, টমেটোসহ নানা প্রকার শাক-সবজি ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারদের মাধ্যমে চালান হয়ে থাকে। প্রতি বছর জুলাই মাসের শুরুতে এখানকার হাট-বাজার ও রাস্তার মোড়ে রমরমা সবজির হাট বসলেও এবার ভিন্ন চিত্র। লকডাউনের ফলে বাইরের পাইকারদের তেমন আসা-যাওয়া নেই। করোনা ভাইরাস প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরণের উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে আবাদকৃত সবজি কিভাবে বাজারে তুলবেন এবং বিক্রি করবেন এসব নানা বিষয় চাষিদের ভাবিয়ে তুলেছে। উপজেলার কৃষ্ণ নগর গ্রামের সবজি চাষি অরুণ হালদার শ্যামপাড়া গ্রামের নির্মল ম-ল, অসীম ম-ল, বড়বাড়িয়া গ্রামের হীরামন মাঝি, বিনয় ম-লসহ অনেকে হতাশা ব্যক্ত করে জানান, গত কয়েক বছর ধরে বন্যা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এতে লোকসান গুনতে হয়েছে তাদের। এ বছর অবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে কিন্তু চলমান লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতিতে অনেকটা দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে সেটি ভেবে পাচ্ছেন না তারা। উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, এ বছর ৬ শ, ২৯ হেক্টর জমিতে শশা ও ২ শ, ৬ হেক্টর জমিতে করলাসহ মোট ১২ শ, ৯৭ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। সবজির ফলন বেশ ভালো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হলে চাষিরা আশানুরূপ দাম পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।