ঈদের আগে আরেক দফা বেড়েছে সবজির দাম। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বেড়েছে বেশিরভাগ সবজি দাম। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে টমেটোর। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। সবজির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে তেল, পেঁয়াজ ও আদা-রসুন. মরিচ ও মুরগির দাম।
গতকাল শনিবার (১৭ জুলাই) রাজধানীর মুগদা, মা-া, খিলগাঁও ও মতিঝিল এলাকার বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য পাওয়া গেছে। মুগদার সবজি বিক্রেতা আব্দুল বারেক বলেন, গত সপ্তাহে টমাটো বিক্রি করেছি ৮০ থেকে ১০০ টাকা আজকে বিক্রি করছি ১২০ টাকা। ছোট সাইজের একটা আছে দাম ১০০ টাকা। সিজন শেষ হওয়ায় টমোটোর দাম বেড়েছে জানিয়ে এ বিক্রেতা বলেন, এখন বাজারে যেসব টমাটো বিক্রি হচ্ছে সব আমদানি ও কোল্ডস্টোরে টমেটো। এসব টমাটো সব সময় দাম বেশি থাকে। বেগুন, করলা ও বরবটি কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। গাজর আগেও দামই ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা বারেক আরেও জানান, এখন বন্যা আসছে, সবজিও কমে গেছে। এর সঙ্গে কোরবানির কারণে পরিবহন ভাড়াও বেড়েছে। এসব কারণে সবজির দাম বাড়ছে। নতুন সবজি না আসা পর্যন্ত সবজির দাম এমনই থাকবে। এদিকে আজকে প্রতিকেজি ঝিঙে ও চিচিঙ্গা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, বেগুন প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এর মধ্যে লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, আর গোল বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। শশা, কাকরোল ও পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। পেঁপে ও ঢেঁড়স ৪০ টাকা এবং আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। লাউ ও চালকুমড়া আকারভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। কাঁচাকলার প্রতিহালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। লেবু হালিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ টাকা, ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা বিক্রি করছে ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজিতে।
মুগদা বাজারে সবজি কিনতে আসা আসা মো. হানিফ জানান, সব কিছুর দামই বেশি। বেশিরভাগ সবজিই ৫০-৬০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছেমত দাম বাড়ায়-কমায়। আমরা অসহায় মানুষ ওদের দামেই কিনতে হয়। কারণ বিকল্প কোনো উপায় নেই। শাক বিক্রেতা সোলাইমান জানান, পুইশাক, কমলিশাক, ডাটাশাক, লালশাক ও পাটশাক আঁটিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছি। আগেও এ দামেই বিক্রি করেছি। মুদি ব্যবসায়ী শাহজাহান জানান, তেল ও পেঁয়াজ এবং আদা-রসুন মশলা এগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের বোতল এক লিটার ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছি। ৫ লিটার ৭০০ থেকে ৭১০ টাকা বিক্রি করেছি। খোলা সয়াবিন তেল ভালো মানেরটা বিক্রি করছি কেজি ১৩৫ টাকা। এছাড়া দেশি আদা ১০০ ও রসুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং রসুন (চায়না) ৯০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। মুরগি ব্যবসায়ী পলাশ জানান, এখন ব্রয়লার বিক্রি করছি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। সোনালি (কক) মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, লেয়ার (লাল) ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৬০ থেকে ৫৮০ টাকায়, আর খাশির মাংসের কেজি ৮৫০ টাকা। প্রতিহালি লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। এদিকে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। শনিবার প্রতি কেজি রুই, কাতলা আকারভেদে ২৮০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-১৫০, আইড় ৪০০-৫০০ টাকা, মেনি মাছ ৩০০-৪০০, বাইলা মাছ আকার বেধে ২৫০-৪০০ টাকা, বাইন মাছ ৩০০-৪০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকা, পুঁটি ৩০০-৫০০ টাকা, পোয়া ২৮০-৪০০ টাকা, মলা ২৫০-৩৫০ টাকা, পাবদা ২৫০-৩৫০ টাকা, বোয়াল ৪০০-৬০০ টাকা, শিং ও দেশি মাগুর ৪০০-৫০০, টাকি মাছ ৩০০ থেকে ৩৬০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০-১৬০ টাকা, চাষের কৈ ১৫০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।