শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন

৩০ সেকেন্ড স্কিপিং রোপে ১৪৫ বার লাফিয়ে বিশ্ব রেকর্ড করল ঠাকুরগাঁওয়ের রাসেল

বিধান চন্দ্র দাস ঠাকুরগাঁও :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩১ জুলাই, ২০২১

ছেলেবেলায় স্কিপিং বা দড়ি লাফ খেলা খেলেন নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর সেই স্কিপিং বা দড়ি লাফে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠালো ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান রাসেল ইসলাম। মাত্র ২১ বছর বয়সেই স্কিপিং রোপে (দড়ি লাফে) বিশ্ব রেকর্ড করেছে সে।তার এ সাফল্য বিশ্ববাসীর কাছে জেলার নাম উজ্জল করেছে বলে মনে করে জেলার সুশীল সমাজ।তাইতো তাকে এক নজর দেখতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে লোকজন আসছে।তার এ সাফল্যের প্রশংসা করছে তারা। রাসেল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের সিরজাপাড়া গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। সে শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়নরত। জানা যায়, স্কুলজীবন থেকেই রাসেলের ইচ্ছা ছিল স্কিপিং রোপে বিশ্ব রেকর্ড করার। সেই চিন্তা নিয়েই ২০১৭ সাল থেকে সে স্কিপিং রোপের চর্চা শুরু করে। বাসার আশপাশে বিভিন্ন সড়কের ধারে যখন যেখানে সময় পেয়েছে সেখানেই প্রতিনিয়ত স্কিপিং রোপের চর্চা করে গেছে। অবশেষে নিজেকে এই খেলায় পরিপূর্ণ মনে হলে ২০১৯ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করে রাসেল। স্কিপিং রোপের ওপর দুটি বিষয়ে সে চ্যালেঞ্জ করেছিলো। একটি ৩০ সেকেন্ডের অন্যটি ১ মিনিটের ওপর। এক পায়ে ৩০ সেকেন্ড স্কিপিং রোপে ১৪৪ বার লাফানোর বিশ্ব রেকর্ড থাকলেও রাসেল করেছেন ১৪৫ বার। আর ১ মিনিটে এক পায়ে ২৫৬ বার লাফানোর বিশ্ব রেকর্ড থাকলেও রাসেল পেড়েছেন ২৫৮ বার। এর মাধ্যমে তিনি নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়ে রাসেল। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাসেল অনলাইন থেকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদপত্র পায়। স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আজ এই রাসেলের কারণে দেশবাসী আমাদের গ্রামের নাম জানতে পারছে। সকাল থেকে অনেকেই আসছে তার বাসায়। রাস্তাঘাটে অনেকেই বলছেন- বিশ্ব রেকর্ড করেছে রাসেল, তার বাসা কোনটা? এটা শুনতেই অনেক ভালো লাগছে। আমাদের গ্রামের সন্তান আজ আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। রাসেলের বাবা বজলুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলে একটি দড়ি নিয়ে লাফাতো। তাকে বলেছিলাম এসব করে কী হবে বাবা। সে আমাকে বলতো আব্বা আমি একদিন এই খেলা দিয়েই তোমাদের মুখ উজ্জ্বল করব। আজ সত্যিই সে আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তিনি বলেন, বাবা হয়ে আমি আমার সন্তানকে তেমন কোনো কিছু দিতে পারিনি। তবে সে আমাদের দিয়েছে। আজ সকলের মুখে আমার ছেলের নাম। আমি শুধু আমার ছেলেকে সাহস দিয়েছিলাম। এই সাহস নিয়েই এগিয়ে গেছে আমার ছেলে। স্কিপিং রোপে বিশ্ব রেকর্ড করা রাসেল ইসলাম জানায়, স্কিপিং রোপ আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল। ইন্টারনেটে স্কিপিং রোপের ওপর ভিডিও দেখতাম। স্কিপিং রোপে কতবারে বিশ্ব রেকর্ড হয়েছে তা নজরে রাখতাম। ওই বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করার স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি প্রতিনিয়ত চর্চা করে যাই। পড়াশোনার পাশাপাশি যখন যেখানে সময় পেতাম সেখানেই চর্চা করে যেতাম। রাসেল আরও জানায়, দীর্ঘদিন চর্চার পরে যখন দেখলাম আমি এখন সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড করতে পারব তখন গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে চ্যালেঞ্জিং আবেদন করি। এরপর সেখান থেকে আমাকে তিন মাস পরে কিছু গাইডলাইনসহ একটি রিপ্লাই দেওয়া হয়। সেখানে তারা তাদের নিয়ম মতো কিছু ভিডিও চায় আমার কাছে। সেই সঙ্গে কীভাবে সেগুলো করতে হবে তারও বিস্তারিত দেওয়া হয়। এরপর আমি কিছুদিন আরও মনোযোগ দিয়ে সেই কাজগুলো করে তাদের পঠিয়ে দেই। অবশেষে আমি বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে একটি নতুন রেকর্ড করি। যার জন্য আমাকে দুটি সনদপত্র দেওয়া হয়। আমি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তারা আমার মেধাকে গুরুত্ব দিয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com