আমাদের দেশে নানা প্রজাতির ফুল রয়েছে। শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল। পুকুর, দিঘি, খালবিল, ডোবা প্রভৃতি জলাশয়ে সাদা পাঁপড়ির বিছানা মেলে বিকশিত হয় এ ফুল। প্রাকৃতিক নিয়মে এর জন্ম এবং বৃদ্ধি ঘটে। বর্ষার মাঝামাঝি থেকে শুরুকরে শরৎকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত শাপলা ফুল পাওয়া যায়। এ ফুলের কান্ড ও মূল থাকে পানির তলায় আর পাতা ও ফুল পানির উপরে ভেসে থাকে। গ্রামের শিশুরা দল বেধে শাপলা ফুল তুলে নিয়ে আসে। ডাঁটা দিয়ে মালা গাঁথে। শাপলা ফুল বাঙালির জাতীয় প্রতীকের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম মাধ্যম হলেও শাপলা তরকারি হিসেবেও সুস্বাদু। কেউ খান শখ করে, কেউ খান অভাবে পড়ে। অভাবগ্রস্ত বা নিতান্ত গরিবরা বর্ষা মৌসুমে জমি থেকে শাপলা তুলে নানা ধরনের খাবার তৈরি করেন। শহরের লোকজন শখের বশে এ মৌসুমে ২-৪ দিন শাপলা তরকারি বা ভাজি খেয়ে থাকেন। সেই শাপলা কুড়িয়ে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অনেকেই আবার বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বর্ষামৌসুমে বাজার থেকে শাপলা কেনার বায়নাও থাকে পরিবারে অনেক গৃহীনিদের। বাগেরহাটের চিতলমারী হাটের দিন কথাহয় বেশ কয়েকজন শাপলা ক্রেতা বিক্রেতার সাথে। তারমধ্যে টুঙ্গিপাড়ার বাসবাড়িয়া গ্রাম থেকে আসা শাপলা বেপারী লিটন শেখ জানান, শাপলা বিক্রিকরে জীবিকাচলে তার পরিবারের । স্বামী, স্ত্রী, বাবা-মাকে নিয়ে তার পরিবার। বর্ষা ও শীতের মৌসুমে উপজেলার বিল, ঝিল এবং হাওড় এলাকা থেকে শাপলাতুলে তা গ্রাম গঞ্জের হাট- বাজারে বিক্রি করেন ।এভাবে তিনি প্রতিদিন ৭ থেকে ৮শত টাকা উপর্জন করে পরিবারের খাওয়া খরচ ও কাপড় চোপড় কিনে কোনমতে সংসার চালান। শাপলা মৌসুম শেষ হলে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন লিটন। চিতলমারীর শান্তি খালী গ্রামের শাপলা বিক্রেতা সপ্তমশ্রেনীর শিশু হামিম শেখ জানায়, বাবা নেই মা’ বেচে আছে। বিল থেকে ৫০ আটা শাপলা তুলে বাজারে এসেছে। এগুলো বিক্রিকরে কিছু বাজার করে বাড়ি ফিরে যাবে। এব্যপারে শাপলা ক্রেতা আনিচ তরফদার জানান, বর্ষামৌসুমে শাপলার বেশ চাহিদা। অনেকে বিল-ঝিল থেকে তুলে এনে জীবিকা নির্বাহ করেন।অনেকে ব্যবসা করেন বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রিকরে আর্থিক লাভবান হন। এক কথায় “শাপলায় কাপড়, শাপলাই ভাত” আবার শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল।