সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

ধামরাইয়ে আবাসন প্রকল্পের নামে জমি দখল করার অভিযোগে গ্রেফতার ১১

ধামরাই( ঢাকা) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১

ঢাকার ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের মামুরা এলাকায় কাইজারকুন্ড, মাখুলিয়া, সাস্তাপুর, সীতি ও সাচনা মৌজায় কৃষি জমিতে বালু ভরাট করে আকসির নগর নামের একটি আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। এ আবাসন প্রকল্পের ১১জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিভিন্ন অভিযোগে ধামরাই থানা পুলিশ আটক করেছে। গত বুধবার(৪ আগষ্ট) রাতে তাদের আটক করা হয়।আটককৃতদের আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। তাদেরকে আটক করা হয় কুল্লা ইউনিয়নের মাখুলিয়া এলাকার তাদের আবাসন প্রকল্পের অফিস থেকে।তাদের আটক করার পর এলাকাবাসী ঔই আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন ধামরাই থানায়। আটকদের মধ্যে রয়েছে আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল ইসলামের খালাতো ভাই সোহাগ মিয়া(২৩) আমিনুল ইসলাম(৩৮), সুজন হোসেন(২২), নাছির উদ্দীন(৩৭), শফিকুল ইসলাম(২৮), রাসেল(২২), সাইফুল ইসলাম(৩৪), আলমগীর হাওলাদার(৩১), নান্নু শেখ(২৩), মাসুদ রানা(১৮), মোঃ হোসাইন(৩৩)। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় ধামরাইয়ে আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে নিরীহ গ্রামবাসীর জীবন নাকাল হয়ে পড়েছে। এমন সংবাদ ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের দৃষ্টিতে আসলে তিনি আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নিতে বলেন ধামরাই থানা পুলিশকে। অপরদিকে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদের আটক করা হয়েছে।জানা গেছে, কাইজারকুন্ড, মাখুলিয়া, মামুরা, বড় কুশিয়ারা এলাকার বাসিন্দাদের কৃষি জমি ক্রয় করে বালু ভরাট করে আবাসন প্রকল্প গড়ে তুলেছে সাভারের ব্যাংক কলোনির তৌহিদুল ইসলাম গং।আবার অনেকের পৈত্রিক সম্পত্তিও জোর করে ভরাট করে ফেলছে। ক্রয়কৃত জমিতে মাটি ভরাটের সময় তাদের প্রতিবেশিদের জমিতে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। এতে বাধা প্রদান করলেই জমির মালিকসহ প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে ভাংচুর, চাঁদবাজি, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ বিভিন্ন ধারায় প্রায় ডজনখানেক মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে আকসির নগর আবাসন প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শুধু মামলা নয়, তাদের ওপর হামলা চালিয়ে ভঞ্জন রায় নামের একজনের পা ভেঙ্গে দেওয়া হয় গত ফেব্রুয়ারীতে। ভঞ্জন রায় চারমাস পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নেিয় কিছুদিন পূর্বে বাড়ি ফেরেন। তাকেসহ ১২ জনকে আসামি করে গত বৃহস্পতিবার থানায় মামলা দায়ের করে আকসির নগর আবাসন কর্তৃপক্ষ। আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। জানা গেছে, এলাকার অনেকের কাছ থেকে কৃষি জমি ক্রয় করে বালু ফেলে ভরাট করে আকসিন নগর নামে একটি আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হয়ছে।ভরাটের সময় অন্যের জমিতেও বালু ফেলা হচ্ছে জোরপূর্বক। এতে মামলা হামলার ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস করছে না। ভুক্তভোগী বদরুল সরদার বলেন, আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের র্কতৃপক্ষরে কথা না শুনলে এবং যারা তার অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করছে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী ভঞ্জন রায়, সাইদুর রহমান ও বদরুল সরদার বলেন, থানায় গেলে পুলিশ মামলা নেয় না। অথচ আকসির নগর আবাসনের কেউ যদি অভিযোগ দেয় সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি এ্যাকশন শুরু করে গ্রাম ছাড়া করে দেয়। ফলে আকসির নগর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমার ও আমার ভাতিজাকে একাধিক মামলার আসামি করা হয়েছে । ভয়ে কবর স্থানে গিয়ে লুকিয়ে থাকতাম।আবার, ১০ শতাংশ জমিও তারা মাটি ভরাট করে নিয়ে গেছে।ভয়ে কোন কথা বলি না। কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু কালীপদ সরকার বলেন, আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে একাধিক মানববন্ধন, সভা করা হয়েছে। কোন কাজ হয় না।সরকারি ভাবে এর সমাধান করা দরকার। এ বিষয়ে ধামরাই থানা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নির্মল কুমার দাস বলেন,আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করেছেন এলাকাবাসী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ১১ জনকে তাদের আটক করা হয়েছে। তাদের সকলকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। আরো যদি কেউ অভিযোগ করে সেটা তদন্ত করে মামলা নেওয়া হবে। তবে আকসির নগর আবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল ইসলামকে বারবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয় নি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com