গোপালপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রসাশন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালযের আয়োজনে রবিবার সকালে পরিষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার সাত হতদরিদ্র ব্যক্তিকে সেলাইমেশিন প্রদান করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. পারভেজ মল্লিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া ইসলাম সীমা, পৌর মেয়র রকিবুল হক ছানা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মীর রেজাউল হক, আলমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন, প্রেসক্লাব সভাপতি জয়নাল আবেদীন, জেলা পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম রফিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলীম আল রাজী প্রমুখ। উল্লেখ্য, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শেখ পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবা শেখ জহুরুল হক ও মা হোসনে আরা বেগম। একজন সাধারণ বাঙালি নারীর মতো স্বামী-সংসার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখে গেছেন। জাতির পিতা রাজনৈতিক কারণে প্রায়ই কারাগারে বন্দি থাকতেন। এ দুঃসময়ে তিনি হিমালয়ের মতো অবিচল থেকে একদিকে স্বামীর কারামুক্তিসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। অন্যদিকে সংসার, সন্তানদের লালন-পালন, শিক্ষাদান, বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস জুগিয়ে স্বাধীনতা এবং মুক্তির সংগ্রামকে সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ৬ দফা ও ১১ দফার আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ অবদান রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি থেকে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষ করে নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেন। দেশ ও জাতির জন্য তার অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণে জাতি তাকে ‘বঙ্গমাতা’ উপাধিতে ভূষিত করেছে। মাত্র ৫ বছর বয়সে ফজিলাতুননেছা মুজিব তার বাবা-মা দুজনকেই হারান। ১৯৩৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে বঙ্গবন্ধু এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঘাতকের বুলেটে শহিদ হন তিনি।