সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন

শতবর্ষী ব্রজ রানীর মানবেতর জীবন

একরামুল হক মুন্সী চিতলমারী (বাগেরহাট) :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১

বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন ব্রজ রানী, কিন্তু জীবিকার তাগিদে এখনো ছুটতে হয় তাকে। বাগান থেকে শাঁক-সবজি তুলে সেগুলো বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। জীবন সংগ্রামে শতবর্ষী বৃদ্ধা ব্রজ রানী’র পথচলা থেমে নেই। বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে জীর্ণ একটি ঘরে একাই বসবাস করেন তিনি। কখনো বা অর্ধাহারে কখনো বা অনাহারে দিন কাটে তার। সরেজমিনে ব্রজ রানীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, তার বয়স এখন প্রায় শত বর্ষে ছুঁই ছুঁই। এক সময় সুখের সংসার ছিল তার। কিন্তু দেশ স্বাধীনের সময় সব ওলট-পালট হয়ে যায়। বড় সন্তান যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর গুলিতে মারা গেলে তিনি মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তোলা হয়। কিন্তু সেদিনের সে ভয়াবহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেননি তিনি। পরবর্তীতে স্বামীর মৃত্যুর পর সহায়-সম্বল হারিয়ে প্রায় দেড় যুগ আগে ভাইয়ের বাড়ি উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে আশ্রয় নেন। সেখানে একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করেন। জীবিকার জন্য কোন উপায়ান্ত না পেয়ে বাগান থেকে বিভিন্ন শাঁক-সবজি তুলে সেগুলি বাজারে বিক্রি করে কোন রকমভাবে সংসার চালান তিনি। শেষ বয়সে এখন আর চলার শক্তি নেই দেহে। নানা রোগ-ব্যাধি বাসা বাধে শরীরে তবুও বেঁচে থাকার আমরণ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় মিনতী বিশ্বাস জানান, বৃদ্ধা ব্রজ রানী এখন আর আগের মতো চলাফেরা করতে পারেন না। তিনি কিছুদিন ধরে বয়স্ক ভাতার টাকা পেয়েছেন কিন্তু এখন আর পাচ্ছেন না। যে কারণে তাকে মানবেত দিন কাটাতে হচ্ছে। বিষয়টি মানবিক দিক থেকে গুরুত্বের সাথে দেখা উচিৎ। স্থানীয় সমাজপতি জয়ন্ত ম-ল জানান, অসহায় ব্রজ রানীর একটু মাথাগোজার ঠাঁই নেই। বর্তমান সময়ে এমন দুরাবস্থা কারো নেই বললে চলে। কলা-কচু,লতা-পাতা বিক্রি করে কোন রকম সংসার চলে তার। ব্রজ রানী যাতে একটি সরকারি ঘর ও ভাতার টাকা পেতে পারে সেজন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. আবু মূছা জানান, বয়স্ক ভাতার কার্ডে অনেকর সমস্যা হয়েছে। ব্রজ রানীর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com