যশোরে পাটে পানি ও বালু মেশানো ঠেকাতে মাঠে নেমেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের জেলা বাজার কর্মকর্তার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা সরেজমিন বিভিন্ন আড়ৎসহ ব্যবসায়ীদের গুদাম পরিদর্শন করছেন। কোথাও পাটে পানি কিংবা বালু মেশানোর খবর পাওয়া গেলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জেলা বাজার কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এ বছর যশোরে প্রতি কেজি পাটের উৎপাদন খরচ হয়েছে সাড়ে ১৩ থেকে ১৪ টাকা। প্রতি বিঘায় পাট উৎপাদন হয়েছে নয় থেকে ১২ মণ। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ পাট ২২শ’ থেকে ২৪শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষকের কাছ থেকে পাট কেনার পর অধিক মুনাফার আশায় এক শ্রেণির ব্যবসায়ী পানি এবং বালু মেশায়। এতে পাটের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। ফলে, কারখানায় কোনো পণ্য তৈরিতে আশানুরূপ মান থাকে না। এই কারণে মৌসুমের শুরুতে পাটের ভেজাল রোধে মাঠে নেমেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বিভিন্ন জায়গায় সরেজমিন পরিদর্শন করে পাটের মান যাচাই করছেন। হুঁশিয়ার করছেন, পাটে কোনো রকম ভেজাল দিলে ছাড় না দেওয়ার। এ বছর জেলায় মোট ২৬ হাজার ১শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৮শ’ ৫০, শার্শায় ৫ হাজার ৩শ’ ৮০, ঝিকরগাছায় ৪ হাজার ৮শ’, চৌগাছায় ২ হাজার ২শ’ ৫০, অভয়নগরে ১শ’ ১৫, বাঘারপাড়ায় ১ হাজার ৭শ’ ৮০, মণিরামপুরে ৫ হাজার ১শ’ ৫০ ও কেশবপুরে ৪ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমি রয়েছে। সব জমিতে তোষা পাটের আবাদ করেছেন কৃষক। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৮শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করার। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ বছর পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার ২শ’ মেট্রিকটন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৩০ হাজার, শার্শায় ৩৬ হাজার, ঝিকরগাছায় ৫৪ হাজার, চৌগাছায় ২৪ হাজার, অভয়নগরে ১৮শ’, বাঘারপাড়ায় ২০ হাজার ৪শ’, মণিরামপুরে ৬৬ হাজার ও কেশবপুরে ৫৪ হাজার মেট্রিকটন। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর যশোরে হেক্টরে আড়াই মেট্রিকটন পাট উৎপাদন হয়েছে। মৌসুমের শেষের দিকে এই উৎপাদনের মাত্রা বাড়বে বলে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন।