শৈশবের ক্লাব। এরপর আস্তে আস্তে বেড়ে উঠা। তারকা খ্যাতি, কাড়ি কাড়ি ট্রফি, রেকর্ড- সব তো ন্যু ক্যাম্পেই। মেসির সাথে তাই বার্সেলোনার সম্পর্কটা ছিল প্রবল আত্মিক। কখনো এই ক্লাব ছেড়ে যাবেন, ভাবেননি। কিন্তু মাঝে মধ্যে জীবনের অংকটা ঠিক মেলে না। হাঁটতে হয় ভিন্ন পথে। মেসিও তেমন ন্যু ক্যাম্প ছেড়ে এখন বসতি গড়েছেন প্যারিসে। কিন্তু বার্সা থেকে চলে আসার কাজটি সহজ ছিল না মেসির জন্য। যা ছিল বড় ধরনের ধাক্কা। বার্সায় থাকা হচ্ছে না, এমন খবরটি জানার পর অঝড়ে কেদেছিলেন মেসি। কেদেছিলেন তার স্ত্রী রোকুজ্জোও।
এক বছর আগেই রাগ করে ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্লাবের বোর্ডে পরিবর্তন আসার পর সিদ্ধান্ত থেকে শুধু সরেই আসেননি, নিজের বেতন অর্ধেকে নামিয়ে আনতে রাজি হয়েছিলেন মেসি। কিন্তু কিছুই কাজে আসেনি। বার্সেলোনার আর্থিক অবস্থা এতটাই বাজে হয়ে গিয়েছিল যে তাকে নিয়ম না ভেঙে ধরে রাখতে পারেনি বার্সেলোনা। গত বৃহস্পতিবার পিএসজির হয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করেন মেসি। যেখানে তিনি ব্যক্ত করে বার্সা থেকে চলে আসার আবেগী মুহূর্তগুলো। শুরু থেকেই বললেন মেসি, ‘আমার বাবা ঘরে এসে সে খবর জানাল। বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন এবং যখন ঘরে ফিরলেন, আমাকে খবরটা জানালেন। আন্তোনেলা ও বাচ্চাদের এই দুঃসংবাদ দেয়ার আগে আমাকে প্রস্তুত হওয়ার জন্য সময় দিয়েছেন বাবা।’ এরপর মেসি নিজেও খুব বিচলিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এরপর আমি আন্তোনেলাকে সে খবর দিলাম ও দু’জনই কাঁদলাম। দু’জনেরই খুব মন খারাপ হয়েছে। এরপর কিভাবে বাচ্চাদের এ খবর দেয়া যায়, এ ব্যাপারে কথা বললাম। কারণ গত ডিসেম্বরেই আমরা বলেছি, আমরা এখানেই থাকব। আমরা জানতাম, এ খবরে থিয়াগো (বড় ছেলে) কত বড় ধাক্কা খাবে।’
তবে মেসির মতে, বড়দের চেয়ে শিশুরা দ্রুত সব কিছু মানিয়ে নেয়। তার ছেলেরাও তাই করবে। তিনি বলেন, ‘অনেক সময় আমরা বেশি দুশ্চিন্তা করি। যেমন আমরা যেমনটা ভেবেছি, ছেলেরা অতটা বাজেভাবে খবরটা গ্রহণ করেনি। থিয়াগো আমার মতো, আমরা কিছু না বলে ভেতরে-ভেতরে কষ্ট সয়ে নিই। তবে এটা তেমন গুরুতর কিছু নয়। সে–ও অন্যদের মতো মানিয়ে নেবে। ওর জন্য এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। এটা মানুষ হিসেবে বড় হতে ওকে সাহায্য করবে।’