রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন

অর্থ বিভাগের ছাড়ের পরও বিতরণ হয়নি ৫১ শতাংশ ঋণ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১

করোনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রণোদনা

করোনা মহামারীতে অর্থনীতি-জীবন-জীবিকার স্বার্থে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার ঘোষণা দেয়া হয়। প্রণোদনার অর্থ গ্রামীণ এলাকার উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করার কথা। ২০২০-২১ অর্থবছরে এসব খাত ও পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে বরাদ্দকৃত অর্থের ৫৭০ কোটি টাকা ছাড়ও করে অর্থ বিভাগ। তবে অর্থ ছাড় হলেও ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পুরো অর্থ বিতরণ করতে পারেনি। এখন পর্যন্ত ২৭৬ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। অর্থাৎ ছাড়কৃত অর্থের ৫১ শতাংশ বিতরণের বাইরে রয়েছে। আবার ঋণ বিতরণের কাজে সম্পৃক্ত আট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটিই কোনো অর্থ বিতরণ করতে পারেনি। যদিও অর্থ বিভাগ থেকে বরাদ্দের একটা অংশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে ১০০ কোটি টাকা হস্তান্তর করা হলেও তাদের ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্য। একই পরিস্থিতি এনজিও ফাউন্ডেশনেরও। তাদের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের ১০ কোটি টাকা ছাড় হলেও প্রতিষ্ঠানটি কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। এছাড়া জয়িতা ফাউন্ডেশনের জন্য বরাদ্দ করা হয় ৫০ কোটি টাকা। ১০ কোটি টাকা ছাড় হলেও তাদের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ শূন্য।
জয়িতা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মুহাম্মদ আরিফুল ইসলামের বলেন, আমরা ছাড়কৃত টাকা পেয়েছি জুনে। জুলাইয়ে বিতরণ শুরু করে ৫ কোটি টাকা, বাকিটা চলমান রয়েছে। অর্থ বিভাগ জুনেই আমাদের অর্থ ছাড় করেছে, ওই সময়ে এত দ্রুত বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। কারণ ব্যাংকের কার্যক্রমে আমাদের সময় লেগেছে, এরপর আমরা এ অর্থবছরে এসে বিতরণ শুরু করেছি।
আবার ছাড়কৃত অর্থের ব্যবহারে বিপরীত চিত্র দেখা যায় তালিকায় থাকা দুই প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। এসএমই ফাউন্ডেশনের বরাদ্দের ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে অর্থ ছাড় হয়েছে ১০০ কোটি টাকা, যার পুরোটাই বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের অর্ধেক ছাড় হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ছাড়কৃত অর্থের পুরো টাকাই বিতরণ করেছে।
বিষয়টি নিয়ে বিসিক চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান বলেন, আমরাই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা ৬৪ জেলায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ দিই। সে তুলনায় আমাদের বরাদ্দ খুবই কম। ছাড়কৃত অর্থের টাকা প্রথম সপ্তাহেই বিতরণ শেষ। বাকি ৫০ কোটি এ অর্থবছরে পাব এটি আমাদের চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। এজন্য আমরা অর্থ বিভাগের কাছে আড়াই হাজার কোটি টাকা চেয়েছি।
প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় থাকা আট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)। অর্থ বিভাগ এ প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। এর মধ্যে ১০০ কোটি টাকা হস্তান্তর করলেও বিতরণ করতে পেরেছে ৪১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) বরাদ্দের অর্ধেক বা ১৫০ কোটি টাকা হাতে পেয়েছে, তাদের ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৬০ কোটি টাকা। এছাড়া গত অর্থবছরে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের (এসএফডিএফ) জন্য বরাদ্দ হয় ১০০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ থেকে এ প্রতিষ্ঠানের জন্য ছাড়কৃত অর্থের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা এবং তাদের মোট বিতরণের পরিমাণ ২৫ কোটি টাকা। এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজিম হাসান সাত্তার বলেন, গত অর্থবছরে আমরা ১০০ কোটি টাকা পেয়েছিলাম, সেটি সুপরিকল্পিতভাবে ১২টি ব্যাংকের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিতরণ করেছি। বরাদ্দের বাকি ২০০ কোটি টাকা শিগগিরই পেয়ে যাব। এটি বিতরণে যথেষ্ট সময় পাব। এজন্য আমরা আরো উৎপাদনমুখী ও নারীদের যুক্ত করার চেষ্টা করব। তবে সারা দেশ থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার আবেদন এসেছে। এখন আমরা আরো ৫০০ কোটি টাকা পেলে এ চাহিদা পূরণ করতে পারব বলে মনে করি।- বণিক বার্তা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com