কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা গড়াই নদীতে পানি বাড়ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চলে দুই ইউনিয়নের ৩৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সেখানকার অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শিশু, বৃদ্ধ মানুষ ও গবাদিপশু নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মায় পানি বেড়েছে দশমিক ৩ মিটার। এখন পানি বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ মিটার থেকে মাত্র দশমিক ৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিবারের মতো এবারও দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৯টি গ্রামের মধ্যে ১৭টি গ্রাম ও চিলমারী ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম মোট ৩৭ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ওই সকল গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বন্যাকবলিতরা বলেন, বন্যায় আমন ধান, পাটক্ষেত ও মরিচক্ষেতসহ কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানি ও পশু খাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পাননি তারা। দৌলতপুর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্ গনমাধ্যমকে বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় ইতোমধ্যে ১ হাজার পরিবারের মধ্যে ১০ মেট্রিকটন চাল, ৩ লাখ টাকার খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মানুষের আশ্রয়ের জন্য এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ে বন্যার্তদের আরও ত্রাণ সহায়তার কথা জানিয়ে স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের কথা জানিয়েছেন এই সংসদ সদস্য। দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের মানুষের ত্রাণ সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। সহায়তা পেলেই আমরা দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড এর তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধির ফলে নদীতীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভাঙনরোধে বিভিন্ন স্থানে বালুর বস্তা ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিনি আরোও বলেন, এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আগামীকালের মধ্যে পানি বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলবে। এতে করে আরও ক্ষয়ক্ষতির আসংখ্যা করছেন তিনি।