সৌরঝড়ে অকেজো হতে পারে স্যাটেলাইটগুলো। নষ্ট হতে পারে সাবমেরিন কেবল। এতে বিচ্ছিন্ন হতে পারে পৃথিবীর ইন্টারনেট সংযোগ। এক গবেষণাপত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে। গত আগস্ট মাসে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত ‘এসিএম সিগকম ২০২১’ সম্মেলনে এই গবেষণাপত্রটি উত্থাপিত হয়। গবেষণাপত্রের ভাষ্য, আগামী দশকের মধ্যে মহাকাশে আবহাওয়ার চরম বিপর্যয় দেখা দিতে পারে, এমন আশঙ্কা ১ দশমিক ৬ থেকে ২ শতাংশ পর্যন্ত। ‘করোনাল মাস ইজেকশন’কে বলা হয় সৌরঝড়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, সৌরঝড়ের ঘটনায় সূর্য থেকে তীব্র চৌম্বকীয় কণার নিঃসরণ হয়। কণাগুলো ঘণ্টায় কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। মাত্র ১৩ ঘণ্টা থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে পৃথিবীতে এসে পৌঁছাতে পারে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীর পরিমণ্ডল এই কণাগুলো থেকে মানুষ রক্ষা পেতে পারে। তবে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের ক্ষতি করবে। একই সঙ্গে তীব্র বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রবাহিত করে মানুষের তৈরি অবকাঠামোগুলোর ক্ষতি করতে পারে। গবেষণাপত্রের একজন লেখক যুক্তরাষ্ট্রের আরভাইনের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পিউটার বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক সংগীতা জ্যোতি বলেন, বেশি ও কম সক্রিয়তার চক্রের মধ্য দিয়ে যায় সূর্য। প্রতি ১১ বছরে এই চক্র আবর্তিত হয়। ১০০ বছরের আরেকটি চক্র আছে সূর্যের। ইন্টারনেট অবকাঠামোর উন্নয়নের সময়টাতে সূর্য কম সক্রিয় ছিল। তবে শিগগিরই ১০০ বছরের চক্রের চূড়ায় পৌঁছাবে। ফলে আমাদের জীবদ্দশায় শক্তিশালী একটি সৌরঝড় দেখার আশঙ্কাই বেশি। তবে সৌরঝড়ে এশিয়ার দেশগুলো তুলনামূলক নিরাপদ বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। তদের মতে, নিম্ন অক্ষাংশের দেশগুলোর ঝুঁকি অনেক কম। তবে সেটা নিশ্চিত করে বলার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা।
জানা যায়, প্রথম সৌরঝড় হয় ১৮৫৯ সালে। সেটি প্রায় ১৭ ঘণ্টায় পৃথিবীতে পৌঁছেছিল। ওই সময় টেলিগ্রাফ নেটওয়ার্কের ক্ষতি করেছিল। বৈদ্যুতিক শক অনুভূতও হয়েছিল। ১৯২১ সালের আরেক সৌরঝড় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টেলিগ্রাফ সংযোগ এবং রেলপথের ক্ষতি করেছিল। ১৯৮৯ সালে তুলনামূলক কম শক্তির আরেক ঝড়ে কানাডার কেবেকের বিদ্যুতের গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।