যুবরাই একটি দেশের মূল শক্তি। যুবরাই পারে একটি দেশকে বদলে দিতে। দক্ষ যুব শক্তি দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি। দক্ষ যুব শক্তি যে দেশের আছে সেদেশের উন্নয়ন বা পরিবর্তন কেউ ঠেকাতে পারেনা। যুবরা পিছিয়ে গেলে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন পিছিয়ে যাবে। দক্ষ যুব সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ এ প্রতিপাদ্যকে মুখ্য করে পালিত হওয়া ১লা নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে বেলা এগারোটায় উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত যুব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহাদাত হোসেন। এসময় তিনি আরও বলেন, জাপান উন্নত হওয়ার পিছনে সেদেশের যুব শক্তির বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তারা যুবদের বৃহৎ অংশকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর করেছে। ফলে বিশ্বের বুকে দ্রুত উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে মাথা তুলেছে জাপান। কিন্তুু তাদের ১ সন্তান নীতির একটি প্রভাব জাতীয় অর্থনীতিতে পড়েছিল। এক সময় মোট জনসংখ্যার একটি অংশই প্রবীণ হয়ে গেছে। ফলে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে গিয়েছিল। এরপর জাপান সরকার ১ সন্তান নীতি থেকে সরে আসে। কিন্তুু বাংলাদেশের সেরকম কোন সমস্যা নেই। আমাদের জনসংখ্যার বৃহৎ একটি অংশই যুব। তবে আমাদের কর্মক্ষম জনশক্তি বেশি হলেও দক্ষ জনশক্তির সংখ্যা কম। ফলে আমরা জাপানের জায়গায় পৌঁছাতে পারছিনা। দক্ষতা ব্যতিত সেটি সম্ভব নয়। দক্ষ যুব শক্তি গড়ে তোলা না গেলে আমাদের জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। যুবদের যে ভূমিকা অর্থনীতিতে তখন সেটি আর আমরা পাব না। আমাদের দেশের ১ কোটি জনসংখ্যা বিদেশে কাজ করে। সেখান থেকে ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয় বাংলাদেশের। কিন্তুু আমাদের দেশে অবস্থানরত বাইরের দেশের নাগরিকরা খুব কম সংখ্যক হয়েও বছরে ৫২ হাজার কোটি টাকা আয় করে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যায়। আমাদের এ জায়গাটিই ঘাটতি রয়েছে। তারা যেসকল কাজ করছে সেসব কাজ আমরা পারছিনা। পারছিনা বলেই আমরা স্থানটিতে পৌঁছতে পারছিনা। আমাদের বাংলাদেশ সরকার যুব বান্ধব সরকার। সরকার নানাভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে যুবদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য। দক্ষ যুব শক্তি গড়তে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৬৪ লক্ষ যুবকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তন্মধ্যে ২২ লক্ষ যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সামনে সরকার ১৬ লক্ষ যুব ও ৩ লক্ষ মহিলাকে প্রশিক্ষণের আওতায় আমার উদ্যোগ নিয়েছে এবং এর কাজ চলমান। বর্তমানে সরকার যুবদের উদ্বুদ্ধ করতে ২৭ টি ক্যাটাগরিতে জাতীয় যুব পুরস্কার দিচ্ছে। যুবদের জন্য সরকার স্বল্প সুদে সহজ কিস্তিতে যুব ঋণের ব্যবস্থা করেছে। প্রশিক্ষণ শেষে সনদ দেয়া হচ্ছে। যুবদের কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে দক্ষ শক্তি হিসেবে গড়ে তুলছে। তাই আমাদের সবাইকে চাকরীর পিছনে না ছুটে আত্ম নির্ভরশীল হয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। কেবল নিজে নয় কমপক্ষে নিজের প্রজেক্টে ২০ জনকে চাকরী দিতে হবে। তাহলেই আমরা তাকে সফল যুব বলতে পারব? তাহলেই ঘুছবে বেকারত্ব। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বাস্তবায়ন হবে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ। যুব সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন। সহকারী যুব উন্নয়ন অফিসার মোঃ ইসমোয়েল খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিশেষ অতিথি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সাবেরী, যুব উন্নয়ন অফিসার শাহ আলম, শিক্ষা অফিসার মোঃ নুরুচ্ছাফা, পরিসংখ্যান অফিসার সৌরভ পাল মিঠুন, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ আলমগীর হোসেন, সমবায় অফিসার আব্দুল শহীদ ভূঁইয়া, সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের সভাপতি সৌমিত্র চক্রবর্তী? যুব সমাবেশে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যুবদের মাঝে ১০ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ঋণ, সনদ বিতরণ করা হয়। পরে সফল যুব ও যুব মহিলাদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অতিথিরা।